সুদান থেকে আসা এক যুবকের গাড়িতে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল এক মহিলার। রবিবার রাতের সেই ঘটনায় রাস্তায় নামে উত্তেজিত জনতা। ঠিক সেই সময়েই ওই ভিড়ের মধ্যে গাড়ি নিয়ে এসে পড়েছিলেন তানজানিয়া থেকে বেঙ্গালুরুতে পড়তে আসা এক ছাত্রী। একুশ বছরের সেই মেয়েটিকে নিশানা করেই ক্ষোভ উগরে দিতে থাকে বিক্ষুব্ধ জনতা!
ঘটনাটি রবিবার রাতের। যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, বেঙ্গালুরুর ওই এলাকায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর ছেলেমেয়ে পড়তে আসে। রবিবার যে গাড়িটি দুই পথচারীকে ধাক্কা মেরেছিল, সেটি চালাচ্ছিলেন সুদান থেকে পড়তে আসা এক যুবক। পুলিশ সূত্রের খবর, তিনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন। গাড়িটি বছর পঁয়ত্রিশের এক পথচারী মহিলাকে পিষে দিয়ে চলে যায়। গুরুতর জখম হন মহিলার স্বামীও। জনতা অভিযুক্ত যুবককে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠার আগেই গাড়ি নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যেতে গিয়ে ক্ষুব্ধ জনতার মুখে পড়ে যান তানজানিয়ার ওই ছাত্রী ও তাঁর তিন বান্ধবী। ছাত্রীটির অভিযোগ, উন্মত্ত জনতা চালকের আসন থেকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে আনে। শুরু হয় শারীরিক নিগ্রহ। নিজেকে বাঁচাতে দৌড়ে একটি বাসে উঠতে গেলে সেই বাসের যাত্রীরাও তাঁকে ধাক্কা মেরে নামিয়ে দেন। এর পর বেধড়ক মারধর করে তাঁকে বিবস্ত্র করা হয় বলে অভিযোগ। হেনস্থার শিকার হন তাঁর সঙ্গে থাকা আরও তিন ছাত্রী। জনতা তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন লাগিয়ে দেয়। বুধবার থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ছাত্রীটি।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে অল আফ্রিকান ছাত্র সংগঠন। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জবাব চেয়েছে তানজানিয়া দূতাবাস। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এ দিন টুইটে জানান, ‘‘বেঙ্গালুরুতে তানজানিয়ার ওই ছাত্রীর সঙ্গে যে লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে বলেছি, অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করতে।’’ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুষমা। তানজানিয়া হাই-কমিশনও ঘটনার দ্রুত বিচার চেয়ে
কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তা ছাড়া, ভারতে পড়তে আসা সমস্ত আফ্রিকান পড়ুয়ার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বলেছে তানজানিয়ান হাই-কমিশনার।