গালিগালাজ করেননি। উত্তেজিত হয়ে হাত-পা ছোড়েননি। অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেননি। স্লোগান দেননি। কালো পতাকা দেখাননি। এ সবের কিছুই করেননি আশুতোষ সিংহ। তবুও তাঁকে মার খেতে হল। প্রথমে পুলিশের টানা-হ্যাঁচড়া, তার পর বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মার। সামান্য একটা নিরীহ প্রশ্ন করে কপালে এমন প্রহার জুটবে তা ভাবতেও পারেননি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আশুতোষ। আর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের ফাঁকে সেটাই বার বার বোঝার চেষ্টা করেছেন, কী অপরাধ করেছেন তিনি?
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেমে যাচ্ছেন। তখনই দর্শকাসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে জোরে একটি প্রশ্নই তো ছুড়েছিলেন আশুতোষ! প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, ছাত্র সংসদের নির্বাচন কবে হবে? এই নিরীহ প্রশ্নটি প্রধানমন্ত্রী কান পর্যন্ত গিয়েছিল কি না তা জানা যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা শুনতে পেয়েছিলেন বিলক্ষণ। তাঁরাই প্রথম টেনে-হেঁচড়ে বের করে আনেন আশুতোষকে। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। আর তার মধ্যেই উড়ে এসে জুড়ে বসেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। আশুতোষকে পুলিশের সামনেই মারধর করার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। যদিও দলের তরফে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার জেরে সোমবার মোদীর অনুষ্ঠান বয়কট করে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন। তারা দিনটিকে ‘ব্ল্যাক ডে’ হিসেবে তুলে ধরে। সে কারণেই যথেষ্ট তত্পর ছিল পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু, সেই তত্পরতা যে নিরীহ একটি প্রশ্নকে ঘিরে অতিসক্রিয় হয়ে উঠবে, তা বুঝতে পারেননি আশুতোষ। কয়েক বছর আগে ঠিক যেমন বুঝতে পারেননি এ রাজ্যের বিনপুরের শিলাদিত্য চৌধুরী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় সারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করে তাঁর কাছ থেকে ‘মাওবাদী’ আখ্যা পেয়েছিলেন শিলাদিত্য। জেলেও যেতে হয়েছিল তাঁকে।
আরও পড়ুন