ত্রিপুরার গোলাপ-কাঁটা বাংলায় আনলেন সুদীপ

পশ্চিমবঙ্গে পুরভোটের মুখে রোজ ভ্যালি-কাণ্ডে সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগকে কলকাতায় নিয়ে এলেন ত্রিপুরা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায়বর্মন। তাঁর নিশানায় দেশের একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ভাবে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ না আনলেও কংগ্রেস নেতা সুদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘মানিকবাবুর আচরণ ও কথাবার্তা যে রোজ ভ্যালির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়ানোর কাজ করেছে, তা নিয়ে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৯
Share:

সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ত্রিপুরা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায় বর্মন। — নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গে পুরভোটের মুখে রোজ ভ্যালি-কাণ্ডে সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগকে কলকাতায় নিয়ে এলেন ত্রিপুরা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায়বর্মন। তাঁর নিশানায় দেশের একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ভাবে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ না আনলেও কংগ্রেস নেতা সুদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘মানিকবাবুর আচরণ ও কথাবার্তা যে রোজ ভ্যালির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়ানোর কাজ করেছে, তা নিয়ে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই।’’

Advertisement

কলকাতা প্রেস ক্লাবে এ রাজ্যের কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্রকে পাশে বসিয়ে সপার্ষদ সুদীপবাবু সোমবার বলেছেন, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিকবাবু ব্যক্তিগত ভাবে কোনও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত, এমন অভিযোগ তিনি এখনই করছেন না। কারণ, তাঁদের কাছে এ ব্যাপারে কোনও প্রমাণ নেই। তবে দুর্নীতিকে মানিকবাবু যে মদত দিয়েছেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত সুদীপবাবু রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি লগ্নি সংস্থা, বিশেষ করে, রোজ ভ্যালি সংক্রান্ত যাবতীয় নথি, তথ্য সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছেন। দাবি জানিয়েছেন, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ত্রিপুরায় এই অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির রমরমার পিছনে যিনি প্রধান পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায় রয়েছেন, সেই মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

ত্রিপুরার শাসক দল সিপিএম অবশ্য এখন বিরোধীদের এই সংক্রান্ত অভিযোগকে উপেক্ষা করার কৌশল নিয়েছে। সাম্প্রতিক কালে সুদীপবাবুর আনা অভিযোগগুলি সম্পর্কে তাঁদের পাল্টা বক্তব্য জানাচ্ছিলেন ত্রিপুরা সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। খোদ মানিকবাবুও অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। দলের হয়ে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর, দলীয় মুখপাত্র গৌতম দাসও। এমনকী, খাস জমি দখল করা রোজ ভ্যালি বিনোদন পার্কের বিষয়েও সরকারের পক্ষে ব্যাখ্যা দিতে পাঠানো হয়েছিল রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা বর্তমান রাজস্ব মন্ত্রী বাদল চৌধুরীকে। কিন্তু বাদলবাবুর বক্তব্যে কংগ্রেসের আনা অভিযোগই ‘মান্যতা’ পাওয়ায় আরও বেশি অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য বামফ্রন্ট সরকার। তাই এখন থেকে বিরোধী কংগ্রেসের অভিযোগকে কোনও গুরুত্ব না দেওয়ার কৌশল নিয়েছে দলীয় নেতৃত্ব।

Advertisement

সুদীপবাবু এ দিন কলকাতায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মানিকবাবু ত্রিপুরার মানুষের প্রতি নন, দায়বদ্ধ তাঁর দলের কাছে। আর তাঁর দল এই সব সংস্থার টাকায় গত কয়েক বছরে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। ছোট-বড় সমস্ত পার্টি অফিসই রাতারাতি কুঁড়ে ঘর থেকে প্রাসাদে পরিণত হয়েছে!’’’

সিপিএম এখন মুখ বন্ধ করলেও মানিকবাবু অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, রোজ ভ্যালি বা কোনও বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা রাখতে তিনি কখনও কাউকে আবেদন করেননি। তাই মদন মিত্রের সঙ্গে তাঁর নাম এক বন্ধনীতে বসানো ‘বেদনাদায়ক’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন