Supreme Court

সদ্যোজাত খুনে সাজাপ্রাপ্ত মহিলাকে বেকসুর খালাস! সুপ্রিম কোর্ট বলল, গোপনীয়তার অধিকারও লঙ্ঘন হয়েছে

ছত্তীসগঢ়ের ওই অভিযুক্তা স্বামী পরিত্যক্তা। অভিযোগ, গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু সদ্যোজাতকে খুন করে একটি জলা জায়গায় ছুড়ে দেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৫৩
Share:

সুপ্রিম কোর্ট —ফাইল চিত্র।

নিজের সদ্যোজাতকে খুনের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত এক মহিলাকে বেকসুর খালাস করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। নিম্ন আদালত এবং ছত্তীসগঢ় হাই কোর্টের রায় খারিজ করে শীর্ষ আদালত জানাল, অভিযুক্তাই যে তাঁর সদ্যোজাতকে খুন করেছেন এবং সন্তান যে তাঁরই, এমন সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া অভিযুক্তার গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

ছত্তীসগঢ়ের ওই অভিযুক্তা স্বামী পরিত্যক্তা। অভিযোগ, গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে তিনি সেই সদ্যোজাতকে খুন করেন। নিজের সন্তানকে একটি জলা জায়গায় ছুড়ে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় ১৩ বছর আগে মামলা হয়। ২০১০ সালে ছত্তীসগড় হাই কোর্ট ওই মহিলাকে দোষী সাব্যস্ত করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় (খুন) তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে অভিযুক্তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় হাই কোর্ট। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মহিলা।

সম্প্রতি ওই মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের এজলাসে। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পরিস্থিতিগত কিছু সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করে মামলাটির রায় ঘোষণা হয়েছে। পাশাপাশি, যে আট জন সাক্ষী দিয়েছেন, তাঁদের কারও সঙ্গে ওই মহিলার সম্পর্ক ভাল নয়। তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সাক্ষ্যদানের সম্ভাবনা থেকেই যায়। যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়েছে, সেই জয়মঙ্গল সিংহের সঙ্গে বরাবর ওই মহিলার সম্পর্ক খারাপ বলে জানতে পেরেছে আদালত।

Advertisement

নিম্ন আদালত এবং হাই কোর্টের যুক্তি ছিল, একটি সদ্যোজাতের দেহ পুকুরে পাওয়া যায় ২০০৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। তথ্য বলছে, তার দুই-তিন দিন আগে অভিযুক্তা একটি সন্তানের জন্ম দেন। অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টে ওই মহিলার আইনজীবী দাবি করেন, যে প্রতিবেশীর সঙ্গে তাঁর মক্কেলের সম্পর্ক ছিল, তিনি সন্তান চাননি। তাঁর মক্কেল সন্তানসম্ভবা জানার পর জোরপূর্বক তাঁকে কিছু ওষুধ খাওয়ান। তার ফলে গর্ভপাত হয়ে যায় তাঁর। তাই অন্য একটি দেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ওই মহিলাকে ফাঁসানো হয়। এবং তার জন্য এতগুলো বছর তিনি সাজা ভোগ করছেন।

সব পক্ষের সওয়াল শুনে এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়ে সুপ্রিম কোর্ট ছত্তীসগড় হাই কোর্ট এবং নিম্ন আদালতের রায়ের সমালোচনা করে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, উপযুক্ত এবং পোক্ত প্রমাণ ছাড়াই মহিলাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এবং তাঁর গোপনীয়তার অধিকারও লঙ্ঘিত হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন