সিবিএসই বোর্ডের মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা এআইপিএমটি (অল ইন্ডিয়া প্রি-মেডিক্যাল অ্যান্ড প্রি-ডেন্টাল এন্ট্রান্স টেস্ট) বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠায় এই পরীক্ষা বাতিল করার আর্জি জানিয়েছিলেন পরীক্ষার্থী-সহ বেশ কয়েক জন। চার সপ্তাহের মধ্যে ফের ওই পরীক্ষা নিতে সিবিএসই বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রায় ৬ লক্ষ ৩০ হাজার পরীক্ষার্থীর উপরে প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে সিবিএসই। ৫ জুন এই পরীক্ষার ফল প্রকাশের কথা ছিল।
এআইপিএমটি-র প্রশ্ন ফাঁসের তদন্ত করছে হরিয়ানা পুলিশ। সেই প্রশ্ন পেয়েছে এমন ৪৪ জন পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারীরা। প্রায় ৭০০ জন পরীক্ষার্থী প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলে ধারণা পুলিশের।
এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে পেশ আর্জিতে আবেদনকারী জানান, এআইপিএমটি-র আর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় থাকছে না। তাই ফের পরীক্ষা নেওয়া উচিত। সিবিএসই-র তরফে সওয়ালে জানানো হয়, ৪৪ জনের জন্য ৬ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থীর ফের পরীক্ষা নেওয়া যায় না। তা ছাড়া চার মাসের আগে ফের এই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়।
কিন্তু সেই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি বিচারপতি আর কে অগ্রবাল ও বিচারপতি অমিতাভ রায়ের বেঞ্চ। বিচারপতিদের মতে, এই পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরীক্ষা দিয়ে যে কোর্সে ভর্তি হওয়ার কথা তাতে ভবিষ্যতের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাই এই পরীক্ষা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ রাখা সম্ভব নয়।
বেঞ্চের মতে, পরীক্ষা সফল করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলি চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তির কাজের ফল সবাইকে ভুগতে হবে। তাই এই পরীক্ষা বাতিল করে চার সপ্তাহের মধ্যে সিবিএসই বোর্ডকে ফের এআইপিএমটি নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশ্ন ফাঁস কেলেঙ্কারির তদন্তও দ্রুত শেষ করতে হরিয়ানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান পরীক্ষার্থীরা। একাংশের মতে, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত সঠিক। কিছু পরীক্ষার্থী বেআইনি পথে প্রশ্ন জেনে অন্যায় সুযোগ নিয়েছিল। অন্য অংশের মতে, এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। কারণ, বিভিন্ন রাজ্যের মেডিক্যাল প্রবেশিকার কাউন্সেলিং কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হবে। ফলে, কোন পথে হাঁটবেন তা নিয়ে বিভ্রান্ত তাঁরা। তবে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় পশ্চিমবঙ্গে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের কাউন্সেলিং-এ কোনও প্রভাব ফেলবে না।