Supreme Court of India

অক্সিজেন বণ্টন নিয়ে দল গড়ল সুপ্রিম কোর্ট

খাতায়-কলমে কেন্দ্রীয় সরকার অক্সিজেন বরাদ্দ করলেও হাতে মিলছে অনেক কম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২১ ০৪:৩৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

দিল্লি-সহ একাধিক রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অক্সিজেন বিলিবণ্টন নিয়ে অভিযোগ তুলেছিল। রাজ্যের নালিশ ছিল, প্রয়োজন মাফিক অক্সিজেন মিলছে না। খাতায়-কলমে কেন্দ্রীয় সরকার অক্সিজেন বরাদ্দ করলেও হাতে মিলছে অনেক কম।

Advertisement

আজ সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলির মধ্যে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে, স্বচ্ছ ভাবে অক্সিজেন বরাদ্দ ও বিলির সূত্র বার করতে একটি ১২ সদস্যের জাতীয় টাস্ক ফোর্স তৈরি করে দিল। বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এম আর শাহের বক্তব্য, কোভিড অতিমারির মোকাবিলায় বিজ্ঞানসম্মত ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই প্রস্তুতি দরকার। তার জন্যই এই টাস্ক ফোর্স। অক্সিজেন ছাড়াও কোভিডের চিকিৎসায় জরুরি ওষুধের জোগান কী ভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা ঠিক করারও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে টাস্ক ফোর্সকে। ভবিষ্যতের জরুরি অবস্থার জন্যও প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ বাতলাতে বলা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের পরে প্রশ্ন উঠেছে, মোদী সরকারের ব্যর্থতার জন্যই কি সুপ্রিম কোর্টকে অক্সিজেন বিলিব্যবস্থা ঠিক করার দায়িত্ব নিতে হল? কারণ রাজ্যগুলির অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার দুর্যোগ মোকাবিলা আইনের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে দেশের সমস্ত উৎপাদিত অক্সিজেনের অধিকার নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে। কেন্দ্রই রাজ্যগুলির মধ্যে সেই অক্সিজেন বিলি করছে। কিন্তু তার কোনও বিজ্ঞানসম্মত সূত্র নেই। স্বচ্ছতার অভাব। সুপ্রিম
কোর্টও কার্যত সেই প্রয়োজনীয়তার কথাই বলেছে।

Advertisement

অস্বস্তিতে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তারা যুক্তি দিয়েছেন, মোদী সরকারই আদালতের কাছে এ বিষয়ে একটি টাস্ক ফোর্স তৈরির সুপারিশ করেছিল। বিরোধীদের প্রশ্ন, মোদী সরকার আদালতে সুপারিশ না করে নিজেরাই টাস্ক ফোর্স তৈরি করেনি কেন? কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ ইউনিভার্সিটি অব হেল্থ সায়েন্সেস-এর প্রাক্তন উপাচার্য ভবতোষ বিশ্বাস, দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালের প্রধান দেবেন্দ্র সিংহ রাণা, দেবী শেট্টি, নরেশ ত্রেহানের মতো চিকিৎসকরা রয়েছেন এই টাস্ক ফোর্সে। ভবতোষবাবু বলেন, “রাজ্যগুলিতে যাতে ঠিক মতো অক্সিজেন পৌঁছয়, কোথাও কোনও সঙ্কট তৈরি না হয়, তার ব্যবস্থা তৈরি করারই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে টাস্ক ফোর্সকে।”

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আপাতত কেন্দ্র যেমন অক্সিজেন বিলি করছে, তেমনই করবে। কিন্তু কেন্দ্রের বরাদ্দ করা অক্সিজেন সত্যিই রাজ্যে পৌঁছচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে টাস্ক ফোর্সকে প্রতিটি রাজ্যের জন্য একটি উপ-কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যে পৌঁছলেও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন রোগীদের কাছে পৌঁছচ্ছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, চিকিৎসকেরা রোগীদের শুশ্রুষায় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এই অডিটের লক্ষ্য নয়।

আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের নেতৃত্বে কোভিড মোকাবিলায় গঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক বসে। সেখানেও অক্সিজেন সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে তথ্য দিয়ে জানানো হয়, দেশে এখন অক্সিজেনের উৎপাদন বেড়ে দৈনিক ৯৪০০ মেট্রিক টন হয়েছে। কিন্তু দেশে প্রায় ১.৩৮ লক্ষ কোভিড রোগী অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন, যা মোট অ্যাক্টিভ রোগীর ৩.৭%। ফলে চাহিদা বাড়ছে। এ দিনের এই বৈঠকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোলের ডিরেক্টর সুজিত কুমার সিংহ বলেন, এই মুহূর্তে দেশের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শহরগুলোতে করোনা ক্রমশ বাড়ছে। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে
অক্সিজেন-সহ হাসপাতাল পরিকাঠামো বাড়াতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন