হোয়াটস্অ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যাওয়ায় মামলা দায়ের হয় সুুপ্রিম কোর্টে। —প্রতীকী চিত্র।
দেশীয় সংস্থা ‘জ়োহো’-র তৈরি মেসেজিং অ্যাপ ‘আরাত্তাই’-এর প্রসঙ্গ এ বার উঠে এল সুপ্রিম কোর্টেও। সম্প্রতি এক মামলাকারীকে হোয়াটস্অ্যাপের বিকল্প হিসাবে ‘আরাত্তাই’ ব্যবহারের পরামর্শ দেয় শীর্ষ আদালত।
‘হোয়াট্সঅ্যাপ’ অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক মহিলা চিকিৎসক সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। মামলাকারী ওই মহিলার বক্তব্য, ‘হোয়াট্সঅ্যাপ’ ব্যবহার করতে পারা তাঁর মৌলিক অধিকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ সেই আর্জি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে না। মামলাকারীর আইনজীবীকে ওই মামলাটি প্রত্যাহার করার নির্দেশও দেয় শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, বেসরকারি মালিকানাধীন কোনও পরিষেবা সংবিধানে বর্ণিত অধিকারের মধ্যে পড়ে না। ওই সময়েই শীর্ষ আদালত বিকল্প উপায় হিসাবে ‘আরাত্তাই’-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে।
মামলাকারীর বক্তব্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাঁর হোয়াট্সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ‘ব্লক’ হয়ে যায়। পরে তিনি এ বিষয়ে সংস্থার থেকে জানতে চাইলে পরের দিন (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তাঁকে জানানো হয়, ওই অ্যাকাউন্টটি ব্লকই থাকবে। এ অবস্থায় মামলাকারীর অভিযোগ, হোয়াটস্অ্যাপ কর্তৃপক্ষ স্বেচ্ছাচারিতা করছেন। এর ফলে তাঁর মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে বলে আদালতে মামলা করেন তিনি। পেশায় চিকিৎসক ওই মহিলার দাবি, হোয়াটস্অ্যাপ অ্যাকাউন্টটি তাঁর পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনে যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
শুনানি চলাকালীন বিচারপতি মেহতা প্রশ্ন করেন, “হোয়াটস্অ্যাপ ব্যবহার করা কেন আপনার মৌলিক অধিকার হবে?” বিচারপতি নাথও তখন মন্তব্য করেন, আরও তো অন্য মেসেজিং অ্যাপ রয়েছে। মামলাকারী সেগুলির মধ্যে কোনওটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে ‘আরাত্তাই’-এর কথাও বলেন তিনি। বিচারপতি নাথ বলেন, “আরাত্তাই নামে একটি অ্যাপ রয়েছে। সেটি ব্যবহার করুন।” সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ অনুসারে, ওই অ্যাপটি যে ভারতে তৈরি, তা-ও উল্লেখ করেন বিচারপতি।
মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে, হোয়াটস্অ্যাপ বা অন্য কোনও বেসরকারি মালিকানাধীন ডিজিটাল প্লাটফর্মের ব্যবহার সংবিধানে বর্ণিত অধিকারের আওতায় পড়ে না। তবে ডিজিটাল মেসেজিং প্লাটফর্মে যোগাযোগ যে বর্তমান সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তা-ও উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।