আজ থেকেই বন্ধ জাতীয় সড়কের ধারের হাজার হাজার মদের দোকান

সুপ্রিম কোর্ট তার আগের নির্দেশ খানিকটা শিথিল করেছে বটে। কিন্তু যে ফাঁক দিয়ে মদের দোকানগুলিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিল সরকার, তা বন্ধ করে দিয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর শীর্ষ আদালত বলেছিল, জাতীয় সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে মদ বিক্রি করা যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

মাঠে মারা গেল রাজ্যের কৌশল! রাত পোহালেই বন্ধ করে দিতে হবে জাতীয় সড়কের ধারে থাকা হাজার হাজার মদের দোকান।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্ট তার আগের নির্দেশ খানিকটা শিথিল করেছে বটে। কিন্তু যে ফাঁক দিয়ে মদের দোকানগুলিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিল সরকার, তা বন্ধ করে দিয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর শীর্ষ আদালত বলেছিল, জাতীয় সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে মদ বিক্রি করা যাবে না। সেই রায়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিল কেরল সরকার। মুকুল তখন বলেছিলেন, শুধুমাত্র ‘অফ শপ’গুলির (অর্থাৎ যে সব দোকানে বসে মদ খাওয়ার ব্যবস্থা নেই) ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ প্রযোজ্য। সেই ব্যাখ্যাকে হাতিয়ার করে মদের দোকানগুলিকে বাঁচানোর উপায় বার করেছিল পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের একটি খুচরো মদ বিক্রেতা সংস্থা ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিল, সব ‘অফ শপ’কে ‘অন শপ’ (যে সব দোকানে বসে মদ খাওয়ার ব্যবস্থা আছে কিন্তু অন্য খাবারের আয়োজন না-ও থাকতে পারে) হিসেবে লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলেছে সরকার। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে কিছু বলা না হলেও এমন পরিকল্পনার কথা অস্বীকারও করা হয়নি। নবান্ন সূত্রে বলা হয়, এ রাজ্যে জাতীয় সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে হাজার দুয়েক মদের দোকান রয়েছে। সেখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষ কাজ করেন। তা ছাড়া এই সব দোকান থেকে মদ বিক্রির সূত্রে বছরে হাজার কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায় হয়। ফলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানলে রাজ্যের অর্থনীতির উপরে বড়সড় প্রভাব পড়বে। রোহতগির ব্যাখ্যা মেনে পশ্চিমবঙ্গের মতো ঘুরিয়ে ছাড়পত্র দেওয়ার পথে হাঁটছিল কেরলও।

আরও পড়ুন:​ ‘ওরা কাঁচা ডিম খায়! নরমাংসও খায় শুনেছি, ওরা সব করতে পারে’

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার অ্যাটর্নি জেনারেলের পর্যবেক্ষণ খারিজ করে দিয়ে বলেছে, তাদের নির্দেশ হোটেল, রেস্তোরাঁ-সহ সব রকম মদের দোকানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে যে সব এলাকার জনসংখ্যা ২০ হাজারের কম, সেখানে জাতীয় সড়ক থেকে মদের দোকানের দূরত্ব ২২০ মিটার হলেই চলবে। ১ এপ্রিল থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে। তবে অন্ধ্রপ্রদেশ বা তেলঙ্গানার মতো যে সব রাজ্যে এক্সাইজ লাইসেন্সের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, সেখানে ১ অক্টোবর থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হবে। আর পুরোপুরি ছাড় পাবে সিকিম ও মেঘালয়। এই দুই রাজ্যের ৮২ শতাংশই হয় পাহাড়ি না হয় বনাঞ্চল। সেখানে ওই সীমা কার্যকর করা সম্ভব নয়।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্যগুলির বক্তব্য ছিল, জাতীয় সড়ক থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বটা বড্ড বেশি। এটা কমানো দরকার। সেই যুক্তিতে সায় দিয়েছিলেন রোহতগিও। কিন্তু বিচারপতি খেহরের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন বলেছে, মদের থেকে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। জাতীয় সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনাই ঘটে মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর কারণে। এখন রাজ্যগুলির দাবি মেনে নিলে বা রোহতগির ব্যাখ্যা গ্রহণ করলে নির্দেশিকা জারির আসল উদ্দেশ্যই নষ্ট হবে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন