গত কাল তিনটি ট্রেনের উদ্বোধন করার পর এ দিন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু ডিব্রুগড়ে নবনির্মিত রেলস্টেশন, যোরহাট টাউন স্টেশনের নতুন ভবন, গুয়াহাটি স্টেশনের ওয়াই-ফাই পরিষেবা এবং গুয়াহাটি স্টেশনের ‘অসমোসিস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট’ প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন। কিন্তু বহু প্রতীক্ষিত বগিবিল রেল-সড়ক সেতুর কাজ ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না জেনে বেজায় রেগে যান তিনি। গাফিলতি নিয়ে তদন্তেরও নির্দেশ দেন।
আজ ডিব্রুগড় স্টেশন থেকে রিমোটে ও ফোনে সব ক’টি প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেন প্রভু। ১৮৮৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ডিব্রুগড় (তদানীন্তন রিহাবাড়ি) স্টেশন থেকে লিডোর উদ্দেশে ৪০০ যাত্রী-সহ প্রথম যাত্রিবাহী ট্রেন চালানো হয়েছিল উত্তর-পূর্বে। আজ তিনি বলেন, ‘‘আগের সরকার উত্তর-পূর্বে ট্রেন যোগাযোগের পরিকাঠামো বিকাশে সে ভাবে নজর দেয়নি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এখন কেন্দ্র এখানকার ট্রেন যোগাযোগকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। শীঘ্রই এই অঞ্চলে অসংরক্ষিত ট্রেন ও সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হবে।’’ তিনি জানান, ২০১৫-১৬ সালে রেলমন্ত্রক দেশে ২৮০০ নতুন ট্রেনলাইন চালু করেছে। যোরহাটের সাংসদ কামাখ্যাপ্রসাদ তাসা এই অঞ্চলের পরিত্যক্ত স্টেশনগুলিকে ফের চালু করা ও যোরহাটে রেল ওভারব্রিজ তৈরি করার আর্জি জানান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পরে বগিবিলের কাজ তদারক করতে গিয়ে ধাক্কা খান প্রভু। সেখানে হাজির রেলকর্তারা জানান, বগিবিলের কাজ শেষ করার জন্য ২০১৭ সালের এপ্রিলের যে লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল, তার মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। ২০১৮ সালের আগে শেষ হবে না কাজ। ২০১৮ সালেরও কবে কাজ শেষ হবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি রেলকর্তারা।
গত কালই উত্তর-পূর্ব পরিষদের বৈঠকে মোদী বলেন, সব প্রকল্প সময়ের মধ্যে এবং বরাদ্দ টাকার মধ্যে শেষ করতে হবে। এ দিকে ১৯৯৭ সালে মঞ্জুর হওয়া এবং ২০০২ সালে কাজ শুরু হওয়া প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটির কাজ ২০০৯ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। বরাদ্দ ছিল ১,৭৬৭ কোটি টাকা। কিন্তু গত সাত বছর ধরে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেড়েই চলেছে। সেতু নির্মাণের খরচও বেড়ে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা ছুঁতে চলেছে।
এনডিএ ক্ষমতায় আসার পরে রেলকর্তারা ও হিন্দুস্তান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি জানিয়েছিল সেতুটির ৪২টি পিলারের মধ্যে ৭-৮টির কাজ বাকি আছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। ২০১৭ সালের জুনের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে সেতু। পরে কাজ শেষ করার সময় ২০১৭ সালের এপ্রিল করা হয়। তখনই প্রভু ঘোষণা করেছিলেন, সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। আজ প্রভু সেখানে হাজির রেলকর্তাদের কাছে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে তাঁরা সদুত্তর দিতে পারেননি। ফলে ক্ষিপ্ত রেলমন্ত্রী জানান, ‘‘এই গাফিলতি কিন্তু আমি সহ্য করব না। বিলম্বের কারণ ও দোষীদের খুঁজে বের করতে তদন্ত হবে। দোষীরা শাস্তি পাবেন।’’