পূর্ণচ্ছেদ হয় না সম্পর্কে, পাকিস্তান প্রসঙ্গে সুষমা

কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাক হাইকমিশনার দেখা করার পরই ইসলামাবাদের সঙ্গে প্রস্তাবিত সচিব পর্যায়ের বৈঠক বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত কাল তিনিই আবার পাক প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, সে দেশে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারত যে কোনও ধরনের সাহায্য করতে প্রস্তুত। মোদী ওই চিঠি পাঠানোর পর দিনই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে পূর্ণচ্ছেদ টানতে চাইছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২২
Share:

বিদেশমন্ত্রী হিসেবে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে সুষমা স্বরাজ। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাক হাইকমিশনার দেখা করার পরই ইসলামাবাদের সঙ্গে প্রস্তাবিত সচিব পর্যায়ের বৈঠক বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত কাল তিনিই আবার পাক প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, সে দেশে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারত যে কোনও ধরনের সাহায্য করতে প্রস্তুত। মোদী ওই চিঠি পাঠানোর পর দিনই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে পূর্ণচ্ছেদ টানতে চাইছে না। যে ক্ষেত্রে যেমন প্রয়োজন, সেই অনুযায়ী চলবে ভারত। শুধু পাকিস্তান নয়, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও এটাই হবে ভারতের নীতি।

Advertisement

বিদেশমন্ত্রীর পদে বসার পর আজই প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করলেন সুষমা। পাকিস্তানের সঙ্গে থমকে যাওয়া শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করায় সুষমা আজ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেন, “কূটনীতিতে পূর্ণচ্ছেদ তথা দাড়ি বলে কিছু হয় না। কমা বা সেমিকোলন হতে পারে।” চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাচ্ছেন মোদী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও সেখানে উপস্থিত থাকবেন। সেখানে কি দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের কোনও সুযোগ রয়েছে? বৈঠকের সম্ভাবনা খারিজ না করে সুষমার জবাব, “পরিস্থিতি যে ভাবে এগোবে, আমরা সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব। আগে থেকে কোনও কিছু স্থির করে রাখা হচ্ছে না।”

প্রধানমন্ত্রী পদে শপথের অনুষ্ঠানে অন্যান্য সার্কভূক্ত দেশের নেতাদের সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সুষমার দাবি, সেই সিদ্ধান্তে কোনও ভুল ছিল না। কারণ নওয়াজের সঙ্গে বৈঠকেই আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের অভিমুখ কী হবে তা স্থির করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী ওয়াঘা সীমান্তে বাণিজ্য-কেন্দ্র গড়ে তোলার অনুরোধ জানিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রীকে। ইতিবাচক জবাবও এসেছিল নওয়াজের পক্ষ থেকে। ওই বৈঠকের ভিত্তিতেই স্থির হয়েছিল ২৫ অগস্ট দু’দেশের বিদেশসচিব পর্যায়ে বৈঠক হবে। সুষমার অভিযোগ, পাক হাইকমিশনারই গোটা প্রক্রিয়াটি ভেস্তে দেন। সুষমার কথায়, “আমরা পাকিস্তানকে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেন নাক গলানো না-হয়।”

Advertisement

তবে কূটনৈতিক ভাবে কড়া বার্তা দিলেও ইসলামাবাদের সঙ্গে বাণিজ-সম্ভাবনা বাড়ানোও যে নয়াদিল্লির লক্ষ্য, তা আজ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে সুষমার কথায়। শুধু পাকিস্তান নয়, সার্বিক ভাবে নতুন সরকারের নীতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “সরকার যেখানে কড়া বার্তা দেওয়ার, সেখানে সেটাই দিচ্ছে। প্রয়োজনে সংবেদনশীলতাও দেখাচ্ছে। মার্কিন বিদেশসচিবকে আমরা জানিয়েছি ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই চায়। কিন্তু ভারতের উপর গোপন নজরদারি আমরা বরদাস্ত করব না। বেজিংকেও বলা হয়েছে নয়াদিল্লি অখণ্ড-চিন নীতিতে আস্থা রাখছে। কিন্তু চিনও যেন মনে রাখে অরুণাচল ভারতের অঙ্গ। তারাও যেন অখণ্ড-ভারত নীতির ব্যাপারে কোনও প্রশ্ন না তোলে। পাকিস্তানের সঙ্গেও আমরা সম্পর্কের অগ্রগতি চাইছি। কিন্তু তা জাতীয় স্বার্থকে লঘু করে নয়।” আবার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাকিস্তানকে সাহায্য করতে চেয়ে মোদীর চিঠি প্রসঙ্গে সুষমা বলেন, “এটা মানবিকতার প্রশ্ন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন