বিতর্কের আবহেই শিলচরে সুস্মিতা

আনন্দবাজার পত্রিকায় সুস্মিতা দেবের ‘বিস্ফোরক’ সাক্ষাৎকার’-এর জের যেন আর কাটতেই চাইছে না। দিল্লি-মুম্বইয়ের বৈঠক ইত্যাদি সেরে সুস্মিতা দেব শিলচর ফিরে আসায় বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৬ ০৩:৪১
Share:

আনন্দবাজার পত্রিকায় সুস্মিতা দেবের ‘বিস্ফোরক’ সাক্ষাৎকার’-এর জের যেন আর কাটতেই চাইছে না। দিল্লি-মুম্বইয়ের বৈঠক ইত্যাদি সেরে সুস্মিতা দেব শিলচর ফিরে আসায় বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে।

Advertisement

জেলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অরুণ দত্তমজুমদার আজ বলেছেন, ‘‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুস্মিতা দেব নানা কথা বললেও সমস্যার মূল জায়গায় যাননি। ২০১৪-র উপনির্বাচনের ফলাফল ভাল করে পর্যালোচনা না করাতেই ২০১৬-র ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে।’’ সাংসদ নির্বাচিত হয়ে সুস্মিতা দেব বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ায় শিলচর উপনির্বাচনে অরুণবাবুই ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী। ৩৭ হাজার ভোটে হেরে যান তিনি। এত ভোটে কী ভাবে হারলেন তার কোনও পর্যালোচনা হয়নি, ক্ষোভের সঙ্গে জানান অরুণবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এক গোষ্ঠী সন্দেহ করে, দেব পরিবারের অন্তর্ঘাতে এমনটা হয়েছে। আরেক গোষ্ঠী গৌতম রায়ের কাঁধে দোষ চাপায়। তাঁরা বলেন, গৌতমবাবু অরুণবাবুর পক্ষে মাঠে নামায় ফল উল্টো হয়েছে।’’ তিনি মনে করেন, সে সময়ে সঠিক পর্যালোচনা করা হলে মোদী-হাওয়াই যে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’, তা ধরা পড়ত। সে ক্ষেত্রে শুধু শিলচর নয়, গোটা রাজ্যে রণকৌশল বদল করা যেত বলে প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতার ধারণা। তাঁর মতে, ব্যক্তিকেন্দ্রীক দল হলে যে সমস্যাগুলি হয়, তাই হয়েছে এ বারের নির্বাচনে। তাঁর কথায়, কংগ্রেসে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ আদিকাল থেকেই। এটা বড় ব্যাপার নয়। আসল হল সংগঠনকে গুরুত্ব দেওয়া। কর্মীরা মনেপ্রাণে কাজ করতে চেয়েছেন, সংগঠন তাঁদের কাছে পৌঁছতেই পারেনি। তিনি আশাবাদী, ‘‘প্রদেশ সভাপতি নির্বাচনের পর সব জায়গাতেই নতুন করে সংগঠনে গতি আসবে। কংগ্রেস ফের ঘুরে দাঁড়াবে।’’

উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে যে পর্যালোচনা হয়নি, তা মেনে নেন সুস্মিতা দেবও। তিনি বলেন, ‘‘অরুণদার পর্যবেক্ষণ যথার্থ। সে সময় মোদী হাওয়া ধরা পড়লে পাল্টা কিছু ভাবা যেত।’’ কেন হল না? সুস্মিতার জবাব, ‘‘তখন আমার বিরুদ্ধেই তো অন্তর্ঘাতের অভিযোগ জমা পড়েছিল।’’ এ বারও যে পর্যালোচনার কাজ হয়নি তাও মেনে নেন সুস্মিতাদেবী।

Advertisement

তিনি জানান, ‘‘জেলা কংগ্রেস সভা ডেকে এ নিয়ে আলোচনা করেছে। এআইসিসি-ও হারের কারণ বের করতে উদ্যোগী হয়েছিল। দেবব্রত শইকিয়া, দিগন্ত চৌধুরী, প্রদ্যোত ভুঁইয়া ও রিপণ বরা-কে বিশেষ পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা জেলায় জেলায় যাবেন, এআইসিসি-কে রিপোর্ট দেবেন বলে ঠিক ছিল। ঠিক সেই সময়েই অঞ্জন দত্তের মৃত্যু হল। ফলে কাজ শুরু হয়নি।’’ ইদের পর পর্যবেক্ষকরা কাজে নামবেন বলে আশা করছেন তিনি। তবে যে আসনে যাই কারণ হোক না কেন, শিলচরে মায়ের হার নিয়ে আক্ষেপ যাচ্ছে না সুস্মিতার। ঘুরে-ফিরে আলোচনায় চলে আসে শিলচর বিধানসভা কেন্দ্রের কথা। তিনি জানান, ‘‘কয়েকজন বলে বেড়াচ্ছেন, প্রার্থীর জন্য কংগ্রেস এ ভাবে শিলচরে হেরেছে। এ কথা মানা যায় না।’’ তাহলে গৌতম রায়, অজিত সিংহ-রা হারলেন কেন, প্রস্ন সুস্মিতার। তমাল বণিক প্রার্থী হলে কী হতো না হতো, আজ আর সে কথায় যেতে চাননি শিলচরের সাংসদ। শুধু বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, ক’দিন আগে-পরে সবাই আবার এক সঙ্গেই কাজ করব। ফলে রাজনৈতিক পরিবেশ যাতে বিষিয়ে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখা সকলেরই দায়িত্ব।’’

তমালবাবু ‘গোপন কথা ফাঁস’ করে দেওয়ার হুমকি অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি বলতে চেয়েছিলাম, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের গোপনীয় বহু বিষয় থাকে। সে সব প্রকাশ্যে এলে ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই ওই সব নিয়ে বাইরে মন্তব্য না করাই উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন