ফিরছেন সাংসদরা, সংসদ অচলেই অটল কংগ্রেস

সাময়িক শাস্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে কাল। কংগ্রেসের পঁচিশ সাংসদ ফের লোকসভায় ফিরছেন কালই। তাঁরা যাতে সংসদের গরিমা অক্ষুণ্ণ রাখেন এবং সভা যাতে চালাতে দেওয়া হয় সে বিষয়ে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন আজ আশা প্রকাশ করলেন ঠিকই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৫৯
Share:

সাময়িক শাস্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে কাল। কংগ্রেসের পঁচিশ সাংসদ ফের লোকসভায় ফিরছেন কালই। তাঁরা যাতে সংসদের গরিমা অক্ষুণ্ণ রাখেন এবং সভা যাতে চালাতে দেওয়া হয় সে বিষয়ে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন আজ আশা প্রকাশ করলেন ঠিকই। কিন্তু কংগ্রেসও সেই সঙ্গে জানিয়ে দিল, বসুন্ধরা-সুষমারা ইস্তফা দিলে তবেই সংসদ চলবে, না হলে নয়।

Advertisement

বাদল অধিবেশনের শুরু থেকেই সংসদের দুই কক্ষ অচল করে রেখেছে কংগ্রেস। সম্প্রতি প্ল্যাকার্ড দেখানোয় আপত্তি জানিয়ে কংগ্রেসের পঁচিশ জন সাংসদকে পাঁচ দিনের জন্য সাসপেন্ড করেন স্পিকার। স্পিকারের এই সিদ্ধান্তের পরে তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, সংযুক্ত জনতা দল-সহ বাকি বিরোধী দলগুলিও লোকসভা বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। এই অবস্থায় লাগাতার চার দিন ধরে সংসদের বাইরে ধর্না দিয়ে সরকারকে ক্রমাগত আক্রমণ করেছেন সনিয়া-রাহুল। স্পিকারের এই সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের হত্যার সামিল বলে ব্যাখ্যা করেছেন সনিয়া গাঁধী।

এই অবস্থায় সংসদের বাইরে মুখ খুলেছেন সুমিত্রা মহাজন। প্রথমেই তিনি বলেছেন, ‘‘সাংসদদের সাসপেন্ড করাটা তাঁর ভাল লাগেনি।’’ কিন্তু পর ক্ষণেই স্পিকার বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নেননি। তাঁর মতে, এর আগে বিরোধী আসনে বসে বিজেপি কী করেছে, এবং সে জন্য এখন বিরোধীরা সেটাই করবেন, এটা কোনও যুক্তি নয়। সনিয়া গাঁধীও জানেন সংসদে কোনটা করা যায়, কোনটা করা যায় না। কোনও সাংসদের আচরণ যদি সভার মর্যাদা হনন করে এবং অন্য সাংসদদের মতামত রাখতে বাধা তৈরি করে তা হলে স্পিকারকে এমন সিদ্ধান্ত নিতেই হয়।

Advertisement

কিন্তু কাল যদি ফের কংগ্রেস সাংসদরা লোকসভায় স্লোগান তোলার পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন? সে ক্ষেত্রে স্পিকার কী করবেন? তিনি কি ফের তাঁদের সাসপেন্ড করবেন? সুমিত্রা মহাজনের জবাব, ‘‘লোকসভায় কোনও সাংসদ যাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রবেশ না করেন, তা নিয়ে বহু বার আর্জি জানিয়েছি। সর্বদল বৈঠকেও এ নিয়ে আবেদন করেছি। কাল কী হয় তা দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

আসলে লোকসভায় প্ল্যাকার্ড হাতে প্রবেশ করা নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যেই এখন দুটো মত রয়েছে। কিছু নেতা মনে করেন, ফের প্ল্যাকার্ড নিয়ে সভায় ঢুকলে বিজেপি বলবে, কংগ্রেস সাংবিধানিক পদের অমর্যাদা করছে। সুষমা-বসুন্ধরাদের ইস্তফার দাবিটিই সে ক্ষেত্রে চাপা পড়ে যাবে। কিন্তু দলের তরুণ ব্রিগেড মনে করেন, সরকারের সঙ্গে সংঘাতে নেমে পড়ে এখন আর ইতস্তত করার কোনও মানে হয় না। তা হলে তো সভা বয়কট করে চার দিন ধরে ধর্না দেওয়ারই কোনও দরকার ছিল না। তাঁরা আবার আগামি কালের জন্য বড় বড়
পোস্টার আর প্ল্যাকার্ড তৈরিও করে ফেলেছেন। কাল তাঁরা সে সব নিয়েই সংসদ ভবনে আসবেন বলে জানিয়েছেন। তবে দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সংসদ যে অচল করে রাখার চেষ্টা হবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সনিয়া আবার এর মধ্যেই জানিয়েছেন, এই সরকার আদিবাসীদের অধিকার রক্ষা নিয়ে এত দিনে কিছুই করেনি। তাই কাল থেকে সেই বিষয়টি নিয়েও সংসদে হইচই করবেন কংগ্রেস সাংসদরা। কিন্তু প্ল্যাকার্ড নিয়ে আদৌ লোকসভায় ঢোকা হবে কিনা, তা কাল সকালে অধিবেশন শুরুর আগে সভানেত্রীর ডাকা সংসদীয় দলের বৈঠকেই স্থির হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন