মায়াকে পাশে পেতে রাহুল, অখিলেশ কথা

আসন্ন লোকসভা এবং বেশ কিছু রাজ্যে বিধানসভা ভোটে ‘মায়ার খেলা’কে কাজে লাগাতে মরিয়া কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এবং এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব। গত সপ্তাহে দিল্লিতে এই কৌশল রচনার লক্ষ্যে প্রাথমিক বৈঠকও করেছেন দুই নেতা।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৪:০২
Share:

বিজেপি যতই আটকানোর চেষ্টা করুক, সঙ্গে রাখতেই হবে ‘বুয়া’-কে।

Advertisement

আসন্ন লোকসভা এবং বেশ কিছু রাজ্যে বিধানসভা ভোটে ‘মায়ার খেলা’কে কাজে লাগাতে মরিয়া কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এবং এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব। গত সপ্তাহে দিল্লিতে এই কৌশল রচনার লক্ষ্যে প্রাথমিক বৈঠকও করেছেন দুই নেতা।

উপনির্বাচনের ধকল শেষ হয়েছে। আবার শুরু হবে বিভিন্ন রাজ্যের ভোটের মরশুম। সেই অবসরে কিছু দিনের জন্য সপরিবার লন্ডনে পাড়ি দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিংহ যাদব। ছুটি কাটাতে যাওয়ার আগেই গত ২০ জুন দিল্লি এসে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন অখিলেশ। দলিত নেত্রী মায়াবতীর ভোটব্যাঙ্ককে সঙ্গে রেখেই যাতে আগামী দিনে জোট গড়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে দু’জনে। ফুলপুর থেকে কৈরানা— উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনগুলি থেকে রাহুল-অখিলেশের কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, বিজেপিকে হটাতে গেলে মায়াবতীকে সঙ্গে রাখাটা জরুরি।

Advertisement

মায়াবতীর বিরুদ্ধে চিনিকল কেলেঙ্কারির অভিযোগকে খুঁচিয়ে তুলতে ফের ফাইল নাড়াচাড়া শুরু করেছে সিবিআই। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ভোটের মুখে মায়াবতীর উপর চাপ তৈরি করে তাঁকে জোটের বাইরে রাখাটাই লক্ষ্য নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব আপাতত প্রকাশ্যে বিএসপি নেত্রীকে আক্রমণ না করলেও তলে তলে তাঁকে ভয় দেখানোর রাজনীতি শুরু করেছেন বলেই সূত্রের খবর। এই পরিপ্রেক্ষিতে মায়াবতী যাতে পিছিয়ে না যান, তা নিশ্চিত করতে বাড়তি রাস্তা হাঁটতেও রাজি অখিলেশ। রাহুলও সেই পরামর্শই দিয়েছেন অখিলেশকে। রাহুল জানিয়েছেন, শুধু আগামী বছরের লোকসভা ভোট নয়, চলতি বছরে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যের বিধানসভা ভোটেও সাধ্য মতো আসন মায়াবতীকে ছাড়তে রাজি তাঁর দল।

গত মাসে মায়াবতী বার্তা দিয়েছিলেন, সম্মানজনক শর্তে আসন পেলে তবেই তিনি জোটের কথা ভাববেন। তার পরই অখিলেশ জানিয়েছেন, বুয়ার সঙ্গে চলার জন্য লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে দু’পা পিছোতেও রাজি তিনি। ছাড়তে রাজি নিজেদের কিছু আসন। অন্য দিকে রাহুলের নির্দেশে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস কমিটির প্রধান কমল নাথ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন মায়াবতীর সঙ্গে। হিসেব অনুযায়ী, ওই রাজ্যে বিএসপি’র আছে ৬ শতাংশ ভোট, কংগ্রেসের ৩৬ শতাংশ। ওই ৬ শতাংশ সঙ্গে পেলে তা বিজেপির বিরুদ্ধে বিধানসভার লড়াইয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে রাহুলের দলের কাছে। রাজস্থানেও কী ভাবে মায়াবতীকে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ দলিত নেত্রী তোপ দেগেছেন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের সঙ্গে গলা মিলিয়ে ২০১৬ সালে ভারতীয় সেনার সার্জিকাল স্ট্রাইকের ভিডিও প্রকাশের সমালোচনা করেছেন তিনি। মায়াবতীর বক্তব্য, এই ভিডিও প্রকাশ করে সরকার আসলে নিজেদের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে চাইছে। তাঁর কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে মানুষের দৃষ্টি যাতে সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা থেকে সরে যায়, সে জন্যই এই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। প্রমাণ হিসেবেই যদি তারা এটি প্রকাশ করে থাকে, তা হলে আজ কেন? অভিযানের পরেই তো এ’টি প্রকাশ করা যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন