অপহৃত কন্ন়ড় অভিনেতা রাজকুমারকে ছাড়িয়ে আনার ক্ষেত্রে তিনিই গিয়ে সরাসরি দর কষাকষি করেছিলেন চন্দনদস্যু বীরাপ্পনের সঙ্গে। সেটা ছিল ২০০০ সাল। আজ ১৮ বছর পরে ফের শিরোনামে তামিল সাপ্তাহিকীর সেই সাংবাদিক-সম্পাদক আর গোপাল। রাজভবনের অভিযোগের ভিত্তিতে এ দিন তাঁকে গ্রেফতার করেছে তামিলনাড়ুর পুলিশ। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল এবং এডিএমকে সরকারের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’ জারির অভিযোগ তুলেছেন ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন। সরব হয়েছে সিপিএম, সিপিআই। সাংবাদিকের গ্রেফতারির নিন্দায় মুখর হয়েছেন অভিনেতা কমল হাসনও।
প্রশাসনের দাবি, সম্প্রতি একটি যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে খবর করতে গিয়ে রাজ্যপাল বনওয়ারিলাল পুরোহিতের নাম টেনেই বিপাকে গোপাল।
কাজের সূত্রে পুণে যাচ্ছিলেন গোপাল। চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে তাঁকে আজ গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজ্যপালের যে সম্মানহানির কথা রাজভবন বলছে, তার মূলে রয়েছে গোপালের কয়েক কিস্তিতে লেখা বিরুধুনগর জেলার একটি বেসরকারি কলেজের যৌন কেলেঙ্গারি ফাঁস। সাংবাদিকের দাবি, ওই কলেজে নির্মলা দেবী নামের এক অধ্যাপিকা ভাল নম্বরের টোপ দিয়ে ছাত্রীদের কলেজের পুরুষ কর্মীদের সঙ্গে জোর করে যৌনতায় বাধ্য করতেন। গত এপ্রিলে এই সংক্রান্ত একটি অডিয়ো টেপও ফাঁস করেন গোপাল। যাতে ছাত্রীদের ওই কুপ্রস্তাব দেওয়ার সময়ে অধ্যাপিকাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি কিন্তু রাজ্যপালকে ভাল মতো চিনি। যখন তখন রাজভবনে যাওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে।’’
তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি নির্মলাকে চেনেন না। এবং খবর প্রকাশিত হওয়ার পর-পরই এক জন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসারকে দিয়ে গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন ওই অভিযুক্ত অধ্যাপিকাও।
কিন্তু সাংবাদিক গোপালকে কেন গ্রেফতার করা হল? পুলিশের পদক্ষেপকে কার্যত সমর্থন করেই এএমএমকে নেতা দিনকরণ জানান, কোনও নিবন্ধে রাজ্যপালের মতো বিশেষ পদমর্যাদার কারও সম্মানহানি মেনে নেওয়া যায় না। রাজ্যের বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণনের দাবি, সংবাদ প্রকাশের নামে এ সব রাজ্যপালকে অপদস্থ করারই চক্রান্ত।
ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিন বিষয়টিকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলেই মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘হলটা কী তামিলনাড়ুর? জঘন্য কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হওয়া এক অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে লেখার খেসারত দিতে হচ্ছে সাংবাদিককে! এটা আর যা-ই হোক, গণতন্ত্র হতে পারে না।’’