M. K. Stalin

শাহ কেন মোদীর উপরে রেগে, স্ট্যালিন-কটাক্ষ

কর্নাটক বিধানসভায় হারে বড় মাপের ধাক্কা খেয়েছে দল। বাকি যে চারটি বড় রাজ্যে এ বছর নির্বাচন রয়েছে তাতে মধ্যপ্রদেশ ছাড়া অন্য কোনও রাজ্যেই ক্ষমতায় নেই দল

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ০৮:৩৫
Share:

তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। ফাইল চিত্র।

লোকসভায় গত বারের ফল ধরে রাখতে তামিলনাড়ু থেকে অন্তত ২৫টি আসনের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন অমিত শাহ। পাশাপাশি তামিল ভাবাবেগকে উস্কে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে আগামী দিনে কোনও তামিল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে দেখা যেতে পারে বলেও গত কাল মন্তব্য করেছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও অমিত শাহের ওই ‘প্রধানমন্ত্রী’ সংক্রান্ত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আজ পাল্টা আক্রমণে নামেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। ডিএমকের ওই নেতা বলেন, ‘‘তামিল প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে অমিত শাহের মন্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু শাহ কেন নরেন্দ্র মোদীর উপরে রেগে আছেন তা অবশ্য আমার জানা নেই।’’ রাজনীতির অনেকের মতে, পরিকল্পিত ভাবে ওই মন্তব্য করে গুজরাতের দুই নেতার মধ্যে দূরত্ব তৈরির কৌশল নিয়েছেন ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন।

Advertisement

কর্নাটক বিধানসভায় হারে বড় মাপের ধাক্কা খেয়েছে দল। বাকি যে চারটি বড় রাজ্যে এ বছর নির্বাচন রয়েছে তাতে মধ্যপ্রদেশ ছাড়া অন্য কোনও রাজ্যেই ক্ষমতায় নেই দল। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে দল আদৌ কতটা ভাল ফল করবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিজেপির অভ্যন্তরেই। বিধানসভা নির্বাচন সাঙ্গ হতেই লোকসভা নির্বাচন। পরোক্ষ ভাবে বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে ওই রাজ্যগুলিতে লোকসভায় ভাল ফল করা অনেকটাই জড়িত রয়েছে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতারা। পূর্ব ভারতে গত বারের মতো ভাল ফল করার আশা কম। এই পরিস্থিতিতে গত কাল সরকারের ন’বছর পূর্তি উপলক্ষে ভেলোরে দলীয় সভায় তামিলনাড়ুর ৩৯টি আসনের মধ্যে অন্তত পঁচিশটি জেতার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দেন শাহ। ওই রাজ্যে বিরোধী দল এডিএমকের সঙ্গে জোট রয়েছে বিজেপির। সেই জোটেও অস্বস্তির ছায়া দেখা দিয়েছে। এডিএমকে-র প্রয়াত নেত্রী জয়ললিতা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাই। ক্ষুব্ধ এডিএমকে শিবির জানিয়েছে, আন্নামালাইকে সরাতে হবে। না হলে জোট নিয়ে নতুন ভাবে ভাববে তারা।

বিজেপির আশা অমিত শাহ যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দিয়েছেন তার অর্ধেকও যদি দল জিততে পারে সে ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যে আসন হারানোর ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। রাজনীতির অনেকের মতে, গত বারের নির্বাচনে ৩৯টির মধ্যে ৩৮টি আসন জিতেছিল বর্তমানের শাসক দল ডিএমকে। ফলে স্ট্যালিনের দল সহজে জমি ছাড়বে না, তা স্পষ্ট। সেই কারণে নতুন লোকসভায় ঘটা করে তামিলনাড়ুর সেঙ্গোল স্থান পেয়েছে। রাজ্যবাসীকে বার্তা দিতেই ওই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। গত কাল নিজের জনসংযোগ যাত্রার মাধ্যমে এখন থেকেই দলকে লোকসভার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন শাহ।

Advertisement

কেন্দ্রে ক্ষমতা ধরে রাখতে বিজেপি যে তামিলনাড়ুতে শক্ত জমি খুঁজছে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন পোড়খাওয়া ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন। পাল্টা রণকৌশলে আজ বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের মধ্যে বিভাজন উস্কে দেওয়ার কৌশল নেন তিনি। গত কাল দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে শাহ দাবি করেছিলেন, অতীতে তামিল রাজনীতিক কে কামরাজ ও জি কে মুপানারের মতো ব্যক্তিত্বের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা থাকলেও তাঁদের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান ডিএমকে নেতৃত্ব। ভবিষ্যতে তামিল কোনও রাজনীতিক প্রধানমন্ত্রী পদে বসবেন বলে দলীয় কর্মীদের কাছে আশাপ্রকাশ করেন শাহ। সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই আজ পাল্টা আক্রমণ শানান স্ট্যালিন। তিনি বলেন, ‘‘তামিল রাজনীতিকের প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে শাহ যে মন্তব্য করেছেন তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু শাহ যে কেন নরেন্দ্র মোদীর উপরে রেগে আছেন তা জানি না।’’ রাজনীতির অনেকের মতে, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের সময়ে নরেন্দ্র মোদী যে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন তা স্পষ্ট। তা সত্ত্বেও কেন অমিত শাহ হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গ তুললেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গুজরাতের দুই নেতার মধ্যে বিভেদের রাজনীতি করার কৌশল নিয়েছেন স্ট্যালিন। একই সঙ্গে স্ট্যালিনের পরামর্শ, ‘‘এই মুহূর্তে তেলঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সৌন্দর্যরাজন ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এল মুরুগন সক্রিয় ভাবে বিজেপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আমার মনে হয় তাঁদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন