Nitish Kumar

খেলা বাকি আছে! বলছেন নীতীশের প্রাক্তন ডেপুটি তেজস্বী, ২০২৪-এর জন্যও ভবিষ্যদ্বাণী লালু-পুত্রের

নীতীশ বিরোধী জোট ছাড়ার কথা ঘোষণা করার পর এবং মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর প্রথম বার মুখ খুললেন আরজেডি নেতা তথা বিহারের সদ্য প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৩২
Share:

নীতীশ কুমার (বাঁ দিকে) এবং তেজস্বী যাদব। —ফাইল চিত্র।

বিহারে আবার ভেঙে গেল চাচা-ভাতিজার রাজনৈতিক সমীকরণ। তার পরই ‘চাচা’ নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন ‘ভাতিজা’ তেজস্বী যাদব। নীতীশ বিরোধী জোট ছাড়ার কথা ঘোষণা করার পর এবং মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর এই প্রথম বার মুখ খুললেন লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী। প্রবীণ জেডিইউ নেতার ‘রাজনৈতিক ডিগবাজি’ নিয়ে বিহারের সদ্য প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “খেলা সবে শুরু হল। খেলা এখনও বাকি আছে।”

Advertisement

তবে নীতীশের বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ শানাবেন না জানিয়েও তেজস্বী বলেন, “মনে হয় আমরা এক জন ক্লান্ত মুখ্যমন্ত্রীকে কাজ করতে দিয়েছিলাম। আমি বিজেপিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, নীতীশ কুমারের দলকে তাদের সঙ্গে নেওয়ার জন্য।” তার পরই রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে লালু-পুত্রকে বলতে শোনা যায়, “নীতীশ কুমার নিজেও জানেন না, উনি কী বলছেন। আমার কথা মিলিয়ে নেবেন, আমি লিখে দিতে পারি যে, ২০২৪ সালে জেডিইউ শেষ হয়ে যাবে।” মনে করা হচ্ছে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নীতীশের দল শোচনীয় ফলাফল করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তেজস্বী। বিহারের জনগণ তাঁর দল আরজেডির পাশে আছে বলেও দাবি করেন তেজস্বী।

রবিবার বেলায় রাজ্যপালের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দিয়ে রাজভবন থেকে বেরিয়ে এসে নীতীশ বলেছিলেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে এই সরকারের সমাপ্তি ঘটালাম। আমি বিভিন্ন মহল থেকে পরামর্শ পাচ্ছিলাম। আমি পুরনো জোট ত্যাগ করেছিলাম, নতুন জোট বাঁধব বলে। কিন্তু এখানে পরিস্থিতি ঠিক নেই। তাই আমি ইস্তফা দিলাম। পুরনো জোট ছেড়ে আমি নতুন জোট তৈরি করব।’’ কিন্তু পরিস্থিতি ঠিক ছিল না বলে কেন বললেন নীতীশ? তার জবাবও দিয়েছেন অষ্টম বার মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়া নীতীশ। তিনি বলেন, ‘‘আমি এই জোটের সঙ্গে কাজ করতে অসুবিধা বোধ করছিলাম। আমি যখন সমস্যার কথা আমার দলকে জানাই, সকলেই আমাকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দেন।’’

Advertisement

নীতীশের শিবির বদলের ইতিহাস অবশ্য নতুন নয়। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি মোদীকে ‘প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ ঘোষণা করার পরে প্রতিবাদ জানিয়ে এনডিএ জোট ছেড়েছিলেন নীতীশ। লোকসভা ভোটে একা লড়ে ভরাডুবি হয় জেডিইউ-র। এর পর ২০১৫-র বিধানসভা ভোটে আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে ‘মহাজোট’ (মহাগঠবন্ধন) গড়ে জয়ী হন তিনি। কিন্তু লালুপ্রসাদের পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফের ২০১৭-য় বিজেপির সঙ্গে হাত মিলেয়েছিলেন।

২০২০-র বিধানসভা ভোটে তুলনায় কম আসন পেয়েও নীতীশের ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ইস্তক বিজেপি-জেডিইউ জোটে সমস্যা বাড়ছিল। কখনও জাতপাত-ভিত্তিক জনগণনা, কখনও সিএএ, কখনও ‘বিহারের সন্ত্রাসের রমরমা’ নিয়ে প্রকাশ্যে তরজায় মাতেন দু’দলের নেতারা। তবে নেপথ্যে সম্ভবত ছিল জেডিইউ-কে চাপে রাখতে বিজেপির ‘ভূমিকা’। ২০২০-র ওই নির্বাচনে এলজেপির প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র চিরাগ বিজেপি-কে ‘ছাড়’ দিয়ে বেছে বেছে জেডি(ইউ)-র বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে ভোট ভাগাভাগির ব্যবস্থা করেছিলেন। নীতীশের দলের অভিযোগ ছিল, বিজেপির বিহার এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশের চক্রান্তেই এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ সালে বিহারের বিধানসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে লড়ে জিতলেও ২০২২ সালের অগস্টে এনডিএ ছেড়ে বিহারে আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের সমর্থন নিয়ে ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার গড়েছিলেন নীতীশ। এ বার আরও এক বার বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারের কুর্সিতে বসতে চলেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন