বিজেপিতে কি এখন প্রতিভার অভাব?

আজ নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার নতুন সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া ন’জনের মধ্যে চার জনই এক সময়ে কর্মরত ছিলেন আমলা হিসেবে। মন্ত্রিসভায় আমলাদের ঢালাও অন্তর্ভুক্তিতে প্রশ্ন উঠেছে— নিজেদের ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় দল’ বলে বড়াই করা বিজেপিতে কি এখন প্রতিভার অভাব?

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

ছবি: সংগৃহীত

নেতা কি ‘কম পড়িতেছে’!

Advertisement

আজ নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার নতুন সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া ন’জনের মধ্যে চার জনই এক সময়ে কর্মরত ছিলেন আমলা হিসেবে। মন্ত্রিসভায় আমলাদের ঢালাও অন্তর্ভুক্তিতে প্রশ্ন উঠেছে— নিজেদের ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় দল’ বলে বড়াই করা বিজেপিতে কি এখন প্রতিভার অভাব? নাকি বাস্তবের জমিতে পরিকল্পনার সফল প্রয়োগের লক্ষ্যে নেতাদের বদলে দক্ষ আমলাদেরই বেশি ভরসা করছেন প্রধানমন্ত্রী?

আরও পড়ুন: তথ্য ও বস্ত্র, স্মৃতিতে ভরসা অটুট মোদীর

Advertisement

যে প্রাক্তন আমলারা আজ মন্ত্রিসভায় এসেছেন, তাঁরা হলেন— প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজকুমার সিংহ, রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি হরদীপ সিংহ পুরী, আর এক প্রাক্তন আইএএস অফিসার অ্যালফোন্স কান্নানথানম এবং মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার সত্যপাল সিংহ। প্রথম তিন জন স্বাধীন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন যথাক্রমে বিদ্যুৎ, আবাসন ও পর্যটনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকে। সত্যপালকে দেওয়া হয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও জলসম্পদ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।

যার পরে বিজেপির অন্দরেই নানা অসন্তোষ। এক নেতার প্রশ্ন, ‘‘কী এমন বাড়তি অভিজ্ঞতা রয়েছে ওই ‘বাবুদের’?’’ প্রাক্তন আইএফএস হরদীপ পাল্টা বলছেন, ‘‘সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে আমলাদের।’’ সেই যুক্তিতে কান দিচ্ছেন না অনেকেই। বিজেপির একাংশ মনে করছে, এতে সাধারণ কর্মীরা কাজের উৎসাহ হারাবেন। ক্ষুব্ধ এক নেতার কথায়, ‘‘রাজকুমার ২০১৩ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে পরের বছরই সাংসদ হন। আজ তিনি মন্ত্রী হলেন। সত্যপালও তা-ই। পুরী ২০১৪-য় দলে যোগ দিয়ে তিন বছরে মন্ত্রিত্ব পেলেন। আর দিল্লিতে অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে খ্যাতি পাওয়া কান্নান তো এক সময়ে বাম রাজনীতি করতেন। ২০১১-য় বিজেপিতে আসেন।’’

১৯৯০ সালে ‘রথযাত্রা’র সময়ে লালকৃষ্ণ আডবাণী বিহারের সমস্তিপুরে ঢোকা মাত্রই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদের নির্দেশে তাঁকে গ্রেফতার করেছিলেন জেলাশাসকের পদে থাকা রাজকুমার। স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে তিনি দাবি করেছিলেন, ২০০৭ সালে হায়দরাবাদের মক্কা মসজিদের বিস্ফোরণে সঙ্ঘের যোগ রয়েছে। সত্যপালের ফ্ল্যাটে আবার যৌন চক্র চলার অভিযোগ উঠেছিল। আজ এই সব পুরনো বিতর্কের কথাও তুলছেন দলের কেউ কেউ।

কটাক্ষ করছে বিরোধীরাও। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী বলেছেন, ‘‘রাজনীতিকদের চেয়ে বেশি ভরসা করা হচ্ছে প্রাক্তন আমলাদের।’’ তোপ কংগ্রেসেরও। দলীয় মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার কথায়, ‘‘যে প্রধানমন্ত্রী কেবল তারুণ্যের কথা বলেন, এই রদবদলের পরে তাঁর মন্ত্রিসভারই গড় বয়স ষাটের উপরে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন