National News

ডোকলাম নিয়ে ডোভালের স্টেপ আউট, সামলাতে হিমশিম বেজিং

একটুও না ঘাবড়ে বিদেশের মাটিতে উঠে আসা বলে সে দিন ‘স্টেপ আউট’ করে ডোভাল বল পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বাউন্ডারি লাইনের বাইরে!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ২১:২৬
Share:

অজিত ডোভাল।- ফাইল চিত্র।

‘ওটা কি আপনাদের জমি?’

Advertisement

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের মুখের ওপর সটান প্রশ্নটা ছুড়ে দিয়েছিলেন চিনের স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং শিয়েচি। এই সে দিন, গত ২৭ জুলাই। ডোভালের বেজিং সফরের সময়।

একটুও না ঘাবড়ে বিদেশের মাটিতে উঠে আসা বলে সে দিন ‘স্টেপ আউট’ করে ডোভাল বল পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বাউন্ডারি লাইনের বাইরে!

Advertisement

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, চিনের স্টেট কাউন্সিলরকে সে দিন ডোভাল জবাব দিয়েছিলেন, ‘‘সব বিতর্কিত সীমান্ত এলাকাগুলিই কি প্রাকৃতিক নিয়মে চিনের হয়ে যায়?’’ প্রতিবেশী প্রায় সবক’টি দেশের সঙ্গেই তো ওই ‘বাউন্ডারি লাইন’ (সীমান্ত অথবা লাইন অফ কন্ট্রোল) নিয়েই যত বিরোধ চিনের। শিয়েচিকে আসলে সে দিন ডোভাল মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, ভারতের যদি নাও হয়, ডোকলাম কি চিনেরও এলাকা? কী ভাবেই বা ডোকলামকে তার ‘অধিকার’ বলে মনে করে চিন, যখন ভূটান বহু দিন ধরেই ডোকলামকে ‘তার এলাকা’ বলে দাবি করে আসছে?

আরও পড়ুন- পুলিশের হাত থেকে রাম রহিমকে ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলেন ভক্তেরা

আরও পড়ুন- প্রায় সব হাজার টাকাই জমা পড়ে গিয়েছে: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সে দিন শিয়েচি ভেবেছিলেন, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ‘মাটি নরম’! তাই প্রথমেই দিয়েছিলেন ‘বাউন্সার’! ভেবেছিলেন ‘ডাক’ করবেন ডোভাল। কিন্তু ‘বাউন্সারে’ পিছু হঠার মানুষ নন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তাই জবাবটা দিয়েছিলেন শিয়েচির মুখের ওপরেই। নীতিটা সেই, ছোবল মেরো না, আত্মরক্ষার জন্য ফোঁস করে রাখো!

তাই ওটুকু বলেই সে দিন থেমে যাননি ডোভাল। কেন ভারতীয় সেনাবাহিনীকে যেতে হয়েছিল ডোকলামে, তাও শিয়েচিকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ডোভাল। সূত্রের খবর, ডোভাল বলেছিলেন, ‘‘যে চুক্তিতে ডোকলামকে ভূটানের এলাকা বলে স্বীকৃতি দেওয়া আছে, সেই চুক্তিতেই বলা হয়েছে, ভূটানের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রয়োজনে ভারত দেখতেই পারে।’’

নিজের জায়গা বলে যাকে দাবি করছে বেজিং, তাকে ফিরে পাওয়ার জন্য কেন ভূটানের সঙ্গে রফার বৈঠকে বসে চিন পরিবর্তে হিমালয়ের কোলে থাকা ছোট্ট দেশটাকে ৫০০ বর্গ কিলোমিটার জমি ছেড়ে দিতে চেয়েছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি ডোভাল।

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ডোভাল সে দিন শিয়েচিকে বলেছিলেন, ‘‘জায়গাটা আপনাদের হলে ভূটানের সঙ্গে আলোচনায় বসে কেন বলেছিলেন, ডোকলাম দাও। বদলে আমাদের (চিন) ৫০০ বর্গ কিলোমিটার জমি নাও?’’

‘নিজের জায়গা’ ফিরে পাওয়ার দাবি মেটাতে কেউ কখনও তার বিনিময়ে নিজের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার ‘অফার’ দিয়েছে? কস্মিন কালেও?

ডোভালের ওই স্ট্রেট ড্রাইভে‌ শিয়েচিকে কার্যত সে দিন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই দেখতে হয়, ‘বল’ তীব্র গতিতে ‘বাউন্ডারি লাইন’-এর বাইরে চলে যাচ্ছে!

এর পরেই দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীরা বসে ঠিক করেন সমস্যাটা ভালয় ভালয় মিটিয়ে ফেলাই ভাল। আর তাতে ‘সই ছাপ’ লাগান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন