নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
স্বাধীনতার দিন লালকেল্লার মঞ্চ থেকে সবাইকে নিয়ে চলার বার্তা দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের মতে, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই প্রধানমন্ত্রীর এই প্রয়াস।
বড়জোর ৫০ মিনিটে বক্তৃতা শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী। সেই সময়সীমাও রক্ষা হয়নি। লালকেল্লা থেকে এযাবৎ সব থেকে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতাও ছুঁয়ে গিয়েছে প্রায় এক ঘণ্টা। বিরোধীরা বলছে, মোদী যা বলেছেন, সেটিও ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা মাত্র। কোনও প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী।
কংগ্রেস আজ সাংবাদিক বৈঠক করে মোদীর বক্তৃতার পাল্টা চার্জশিট প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বছরে ২ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন। এখন বলছেন, নিজেরা কাজ খুঁজুন। ভোটের সময়ে মোদীর ইস্তাহার বলেছিল, কৃষকদের স্বার্থে ফসলের সহায়ক মূল্য বাড়বে, তা নিয়েও এখন উচ্চবাচ্য নেই। অস্বস্তি ঢাকতে মন্ত্রিসভা আজ শুধু সেচের জন্য ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী বলছেন মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা। অথচ বিজেপি নেতাদের ছেলেরাই মহিলাদের সম্মানহানি করছে। নোট বাতিলে কত টাকা এল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখনও পর্যন্ত তার হিসেব দেয়নি। অথচ প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি হিসেব নিয়ে হাজির হলেন। মোদী দুর্নীতি দমনে তাঁর সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে বলেছিলেন, নোট বাতিলের পরে প্রায় তিন লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় এসেছে। গুলাম নবি আজাদের প্রশ্ন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ নিয়ে কোনও হিসেব দেয়নি। তা হলে এই তথ্য কোথা থেকে পেলেন মোদী? আজ এর জবাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। জানিয়েছেন, আয়কর দফতরের তদন্তের ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী এই তথ্য জানিয়েছেন। বিষয়টি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া হিসেবের উপর নির্ভর করে না।
বিভাজনের রাজনীতির যে অভিযোগ গত তিন বছর ধরে মোদী শুনে আসছেন, তার মোকাবিলা করতে গত কাল সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দেন মোদী। সাম্প্রদায়িকতা, জাতপাতের বিরুদ্ধে ভারত-জোড়ো-র স্লোগান তোলেন। এ নিয়ে গুলাম নবি আজাদের মন্তব্য, ‘‘ভারত তো এত দিন জুড়েই ছিল। বিভাজন করল কে? যে সঙ্ঘ পরিবার ভারত ভাঙছে, তাদের কেন থামাতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী? সেই হতাশা থেকেই কী লালকেল্লার বার্তা?’’