National News

সত্যিটা হল, আমি এখনও ‘মুক্ত’ নই, বলছেন হাদিয়া

অপেক্ষার প্রহর যেন আর কাটছে না। হাদিয়ার কথায়: “যাঁদের ভালবাসি, পছন্দ করি, সেই সব মানুষদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। তবে এখনও পর্যন্ত সে সুযোগ হয়নি।”

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কোয়ম্বত্তূর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ১৫:৫৭
Share:

—ফাইল ছবি।

আদালতের কাছে ‘স্বাধীনতা’ চেয়েছিলেন। কিন্তু, এখনও ‘মুক্ত’ নন হাদিয়া। কারণটাও জানিয়েছেন তিনি— স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। ফলে হাদিয়া এখনও জানেন না, কলেজ আরও একটা ‘জেলখানা’য় পরিণত হবে কি না!

Advertisement

মঙ্গলবার রাতেই কোয়েম্বত্তূর থেকে পুলিশের গাড়িতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সালেমে এসে পৌঁছেছেন হাদিয়া। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সোমবারই তাঁর আর্জি মেনে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সালেমের এক হোমিওপ্যাথি কলেজে পড়া শেষ করবেন হাদিয়া। ‘লভ জিহাদ’ মামলায় তিনি এখন সংবাদ শিরোনামে। তবে পড়াশোনা করার অনুরোধ মেনে নিলেও স্বামীকে অভিভাবক হিসেবে চেয়েও পাননি তিনি। বরং সে ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের প্রতিক্রিয়া ছিল, স্বামী কখনও স্ত্রীর অভিভাবক হতে পারেন না। সালেমের কলেজের ডিনকে হাদিয়ার স্থানীয় অভিভাবককে হিসেবে নিয়োগ করেছে শীর্ষ আদালত। হাদিয়া বলেন, “আদালতের কাছে স্বাধীনতা চেয়েছিলাম। স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত আমি মুক্ত নই। আর সেটাই সত্যি! এখনও পর্যন্ত আমি স্বাধীনতা লাভ করিনি।”

আদালতের নির্দেশের কপি এখনও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এসে পৌঁছয়নি বলে জানিয়েছেন হাদিয়া। তার জন্য আরও দু’-তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে সেই অপেক্ষার প্রহর যেন আর কাটছে না। হাদিয়ার কথায়: “যাঁদের ভালবাসি, পছন্দ করি, সেই সব মানুষদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। তবে এখনও পর্যন্ত সে সুযোগ হয়নি।”

Advertisement

আরও পড়ুন

বাবা-কাকা-দাদা মিলে গণধর্ষণ করল যুবতীকে!

দীপিকার মাথা, মমতার নাক কাটার হুমকি দিয়ে অবশেষে আমুর ইস্তফা

সীসার পরে ছাই! আবার বিপদের আভাস ম্যাগিতে

গত ডিসেম্বরে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন কেরলের বাসিন্দা অখিলা অশোকন। নিজের নাম পাল্টে রাখেন হাদিয়া। এর পর দক্ষিণ কেরলের কোল্লামের বাসিন্দা শাফিন জাহানকে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু, সে বিয়ে অস্বীকার করেন হাদিয়ার বাবা অশোকন। তা নিয়ে কেরালা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালতে অশোকনের দাবি ছিল, মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তকরণে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকী, জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-এ যোগ দিতে তাঁকে যুদ্ধবিদ্ধস্ত সিরিয়ায় পাঠানো হবে। চলতি বছরের মে মাসে ওই বিয়ে নাকচ করে দেয় কেরালা হাইকোর্ট। এর পরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন হাদিয়ার স্বামী। তার পর অগস্টে হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে হাদিয়ার বিয়ের ঘটনা আসলে ‘লভ জিহাদ’ কি না তা নিয়ে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ‘লভ জিহাদ’ বিতর্কে কেরল-সহ গোটা দেশেই আলোড়ন তোলে হাদিয়া মামলা।

শীর্ষ আদালতে হাদিয়ার বয়ান-সহ রিপোর্ট জমা দেয় এনআইএ। সেখানেও হাদিয়া বলেছেন, স্বেচ্ছায় মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। মুসলিম হতে কেউ তাঁকে বাধ্য করেননি। তবে মাস ছয়েক ধরেই স্বামীর থেকে তাঁকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি হাদিয়ার। তিনি বলেন, “গত ছ’মাসে আমাকে এমন মানুষদের সঙ্গে রাখা হয়েছিল যাঁরা ফের আমার ধর্ম বদলের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। আমি বাবার সঙ্গে কথা বলেছি। তবুও স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। ভারতীয় অন্য নাগরিকদের মতোই আমি নিজের অধিকারগুলি চাই। এতে কোনও রাজনীতি বা জাতির প্রশ্ন জড়িত নয়। আমি শুধু আমার পছন্দের মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে চাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন