ডোকলাম স্বস্তিতে রইল কিছু কাঁটাও

আপাতত ডোকলাম সঙ্কটের মীমাংসা হওয়ায় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সোমবারই সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা-সহ বেশ কিছু বিরোধী নেতাকে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৪০
Share:

ফাইল চিত্র।

ডোকলাম নিয়ে আড়াই মাসের অশান্তি আপাত ভাবে শেষ হয়েছে। ব্রিক্‌স সম্মেলনে যোগ দিতে এ বারে কিছুটা নির্ভার হয়েই চিনে যেতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘরোয়া রাজনীতিতেও শাসক শিবির খানিকটা স্বস্তিতে। আপাতত ডোকলাম সঙ্কটের মীমাংসা হওয়ায় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সোমবারই সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা-সহ বেশ কিছু বিরোধী নেতাকে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। চিন নিয়ে সরকারের পাশে থাকার জন্য বিরোধীদের কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা।

Advertisement

সীতারাম কিন্তু জবাবে সতর্কই করেছেন সরকারকে। বিদেশমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, ছাতি ঠুকে আস্ফালনের বদলে কূটনৈতিক পথে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টাকে তাঁরা সব সময়েই স্বাগত জানাবেন। কূটনীতিকদেরও অনেকে এই বলে সতর্ক করছেন যে, আপাত ভাবে জট কেটেছে বলে মনে করা হলেও, কাঁটা কিছু রয়েই গিয়েছে। তাঁদের মতে, ডোকলাম-কাণ্ডে চিন-নীতির প্রশ্নে বোধ হয় খানিকটা বোধোদয় হল মোদী সরকারের। এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে বেজিংয়ের সঙ্গে পাঞ্জা কষার আগে আগুপিছু ভেবে এগোনোর শিক্ষাও পেলেন মোদী। তা ছাড়া, ডোকলাম সমস্যা সাময়িক ভাবে মিটলেও অরুণাচলপ্রদেশ অথবা লাদাখে আবারও যে আগ্রাসন হবে না, তেমন কোনও নিশ্চয়তাও নেই। সাউথ ব্লককে তাই প্রয়োজনীয় সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সক্রিয় থাকতে হচ্ছে।

এক কূটনৈতিক কর্তার বক্তব্য, ডোকলাম-কাণ্ড চোখে আঙ্গুল দিয়ে ভারতের নিরাপত্তার ফাঁকগুলি দেখিয়ে দিয়েছে। ডোকলামে যে রাস্তা তৈরি নিয়ে বিতর্ক, তা তো হঠাৎ করে জুন মাসে শুরু হয়নি। শিলিগুড়ি করিডরকে নজরে রেখে দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তা বানাচ্ছিল চিন। ভারত যে এ ব্যাপারে নড়ে বসছে না, সেটাও তারা হিসেবের মধ্যে রেখেছিল। এমনকী, ভারতের দু’টি ফাঁকা বাঙ্কার চিন উড়িয়ে দেওয়ার পরেও সমুচিত প্রতিক্রিয়া দিতে ঢের সময় লাগিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।

Advertisement

সেনা সরালেও চিন জানিয়েছে, ডোকলামে টহলদারি চালিয়ে যাবে তারা। চিনা সেনা ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘‘আমরা নয়াদিল্লিকে মনে করিয়ে দিচ্ছি, তারা যেন ডোকালাম-কাণ্ড থেকে শিক্ষা নেয়।’’ চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনইয়াংও মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ‘‘সীমান্তরক্ষা ও সেখানে বসবাসকারী মানুষের জীবনের মানোন্নয়নে আমরা বিভিন্ন পরিকাঠমোগত উন্নয়ন দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছি।’’

ইঙ্গিতটি স্পষ্ট, প্রয়োজনে আবার ডোকালামে রাস্তা তৈরির কাজে হাত দিতে পারে বেজিং। সাউথ ব্লকের কাছে নিঃসন্দেহে এটা একটা কাঁটা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন