রাহুলের ভাবনাই উঠে এল সনিয়ার মুখে। ফাইল চিত্র।
নীতিগত বিষয়ে কংগ্রেসের রাজ্য স্তরের নেতাদের মধ্যেও স্পষ্ট বোঝাপড়া ও একই রকম চিন্তাধারার অভাব রয়েছে বলে আজ খোদ সনিয়া গাঁধী মন্তব্য করলেন। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গাঁধী ঠিক এই দিকেই আঙুল তুলে দলের নেতাদের মতাদর্শগত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন বলে যুক্তি দিয়েছেন। বস্তুত রাহুলের ভাবনাই এ দিন উঠে এল সনিয়ার মুখে।
আজ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা ও প্রদেশ সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন সনিয়া। সেখানে রাহুলের উপস্থিতিতে কার্যত তাঁর সুরেই সনিয়া বলেন, ‘‘বিজেপি-আরএসএসের বিদ্বেষমূলক প্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের মতাদর্শগত লড়াই করতে হবে।’’ তাতে ঘাটতির দিকে আঙুল তুলে সনিয়া বলেন, ‘‘এআইসিসি প্রতি দিন দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশদ বিবৃতি দেয়। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে, তা আমাদের ব্লক ও জেলা স্তরে কর্মীদের কাছে পৌঁছয় না।’’ কার্যত দলে প্রচারের দায়িত্বে যাঁর রয়েছেন, তাঁদের কাজকর্ম নিয়েই এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন সনিয়া। দলের কর্মীদের মতাদর্শগত প্রশিক্ষণের নির্দেশ দিয়ে সনিয়া বলেন, কর্মীদের
প্রশিক্ষিত করতেই হবে। যাতে তাঁরা কংগ্রেসের মতাদর্শ তুলে ধরে লড়াই করতে পারেন।
এর আগে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে সনিয়া দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের গোষ্ঠী জি-২৩-কে বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, “কোনও ক্ষোভ থাকলে তা সংবাদমাধ্যমকে বলার দরকার নেই। তাঁকেই বলা যেতে পারে।” আজ ফের ‘শৃঙ্খলা ও ঐক্য’-এর উপরে জোর দিয়ে সনিয়া বলেন, “ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষার থেকে সংগঠন মজবুত করাকে প্রাধান্য দিতে হবে।”
কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচনকে সামনে রেখে ১ নভেম্বর দলের সদস্যপদ অভিযান শুরু হচ্ছে। আজ বৈঠকে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা দলের নেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, “এ বিষয়ে কোনও জল মেশানো চলবে না। যাঁরা সত্যিই সদস্য, তাঁদেরই নাম তুলতে হবে। যাতে দলের আন্দোলনে তাঁদের পাওয়া যায়। সদস্যপদের জন্য যে সব নাম আসছে, তার সত্যতা যাচাই করতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা দরকার।”
সূত্রের খবর, প্রিয়ঙ্কা দলের নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন, “যখন কাউকে সদস্য করাতে যাচ্ছেন, তখনও মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, কৃষকদের সমস্যার মতো বিষয় নিয়েই যান।” প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশে লখিমপুর খেরিতে মাঠে নামার পরেই নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীর জনসভায় গিয়েছিলেন। এ বার তিনি ৩১ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের গোরক্ষপুরে জনসভা করতে চলেছেন।
রাহুল আগেই দলিত, আদিবাসী, অনগ্রসর শ্রেণির থেকে কংগ্রেসের সদস্য করার উপরে জোর দিয়েছিলেন। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সদস্যপদ অভিযানের সময় কংগ্রেস নেতারা দলিত, আদিবাসী, অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের বাড়িতে গিয়ে কথাবার্তা বলবেন। কংগ্রেস আগেই নভেম্বরের শেষে মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধীও তাতে যোগ দিয়ে রাস্তায় নামবেন।