ভোজ গাঁধীহীন, দলের চিঠিতে নেই রাহুলও! 

নীতি আয়োগের বৈঠক রয়েছে আগামিকাল। তার জন্য, দিল্লিতে এসেছেন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ও নেতারা। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ তাঁদের নৈশভোজে ডাকেন আজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০৩:৪৫
Share:

মহারাষ্ট্রের বিধানসভায় কংগ্রেস নেতাদের রদবদল হল। সেই বিবৃতিটিও এল নিঃশব্দে। তবে সেই বিবৃতিতেই ধরা পড়ল একটি বড় বদল।

Advertisement

এত দিন দেশের যে কোনও প্রান্তে এই ধরনের কোনও রদবদল বা নিয়োগ হলে, তা করা হত কংগ্রেস সভাপতির নামে। হাল আমলে যেটি হচ্ছিল রাহুল গাঁধীর নামে। কিন্তু আজকের বিবৃতিতে রাহুলের বদলে লেখা হয়েছে ‘এআইসিসি অনুমোদন করেছে’। নীচে সই সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা কে সি বেণুগোপালের।

নীতি আয়োগের বৈঠক রয়েছে আগামিকাল। তার জন্য, দিল্লিতে এসেছেন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ও নেতারা। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ তাঁদের নৈশভোজে ডাকেন আজ। এসেছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ছত্তিসগঢ়ের ভূপেশ বাঘেল, হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা, পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণসামি, আনন্দ শর্মারা। সন্দেহ নেই, নীতি আয়োগে দল কী অবস্থান নেবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেখানে। তাতেও অনুপস্থিত গাঁধী পরিবার!

Advertisement

দু’দিন আগেও গাঁধী পরিবারের অনুপস্থিতিতে কংগ্রেসের ন’জন শীর্ষ নেতা বৈঠক করেছেন এ কে অ্যান্টনির নেতৃত্বে। এই নেতারাই ছিলেন রাহুলের গড়া ‘কোর-গ্রুপ’-এর সদস্য। যে ‘কোর-গ্রুপ’ রাহুলের ইস্তফার সঙ্গেই ভেঙে গিয়েছে বলে কংগ্রেসের দাবি। সে দিনের পর আজ যে রদবদল হল, সেখানেও থাকল না রাহুলের নাম। যা দেখে কংগ্রেসের অনেকেই স্বীকার করছেন, রাহুল গাঁধী যে ইস্তফায় অনড়, তা স্পষ্ট হচ্ছে ক্রমশ। আপাতত দলের নেতারাই সামগ্রিক দায়িত্বে দল চালাবেন এ ভাবে। অন্তত যত দিন না রাহুল ফিরে আসতে রাজি হন। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের অধিবেশন। সেটি অবশ্য সনিয়া গাঁধীই সামলাবেন।

সংসদের অধিবেশন শুরুর আগে সনিয়াকেই স্থির করতে হবে লোকসভায় দলের নেতা কে হবেন। রাহুল অবশ্য আগে লোকসভার দায়িত্ব নিতে রাজি আছেন বলে কংগ্রেসের একটি সূত্র দাবি করেছিল। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি কি সেই দায়িত্ব নেবেন? উত্তর এখনও অজানা। তবে এরই মধ্যে সনিয়ার নির্দেশে রবিবার সরকারের ডাকা সর্বদল বৈঠকে বাংলার সাংসদ অধীর চৌধুরী ও কেরলের কে সুরেশকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। কে সি বেণুগোপাল আজ সনিয়ার সেই নির্দেশ জানিয়ে দেন দুই নেতাকে।

কংগ্রেসে জল্পনা শুরু হয়েছে, রাহুল কি তবে লোকসভায় দলের নেতা হতেও রাজি নন? অধীর বা সুরেশকেই কি নেতা বা উপনেতা করা হবে? এর আগে এই পদের জন্য মণীশ তিওয়ারি, শশী তারুরের নামও উঠে আসছিল। কিন্তু দলের অনেকের মতে, শশী তারুরের হিন্দিতে সমস্যা রয়েছে। তার উপর সুনন্দা পুষ্করের মামলাও চলছে। মণীশ তুলনায় অভিজ্ঞ। কিন্তু এক বার তিনি রাহুলের ইচ্ছা সত্ত্বেও ভোটে লড়েননি। সুরেশের তেমন ‘নেতা’ হওয়ার যোগ্যতা নেই বলে মনে করা হয়, কিন্তু দক্ষিণের ভারসাম্য রাখতে চায় কংগ্রেস। বিশেষ করে রাহুল কেরল থেকে জিতে আসার পর। অধীর আবার ঘোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী বলে পরিচিত। যে কারণে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা হলে তৃণমূলের সঙ্গে সমন্বয়ে সমস্যা হতে পারে। আর মুখ্য সচেতক হলে তো আরও বেশি। অধীর নিজেও সচেতক পদ নিতে আগ্রহী নন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন