জঙ্গলে নজরদারি চালানো, বিভিন্ন আধুনির প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, বিভিন্ন প্রজাতির শ্বাপদ-উভচর-সরীসৃপদের চিহ্নিত করা ও সংরক্ষণের নানা উপায় সম্পর্কে অসম ফরেস্ট স্কুলে এক সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলল। কাজিরাঙার লাগোয়া কার্বি আংলং-এর অরণ্যকর্মীদের এই সাত দিনে বিভিন্ন বিষয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিলেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষ জোর দেওয়া হল উল্লুক সংরক্ষণের উপরে। কাজিরাঙা থেকে বাঘ, হাতি, গন্ডার প্রায়ই কার্বি আংলং-এর অরণ্যে আশ্রয় নেয়। বিশেষ করে বন্যার সময় কার্বি আংলং-এর পাহাড়ি অরণ্যই তাদের বড় ভরসা। কিন্তু, কাজিরাঙার মতো পরিকাঠামো ও প্রশিক্ষণ কার্বি আংলং-এর বনকর্মীদের নেই। পাশাপাশি, স্বশাসিত পরিষদের আওতায় থাকায় সেখানকার অরণ্যে নজরদারি ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও সুযোগ-সুবিধা কম। পাশাপাশি, প্রাইমেট রিসার্চ সেন্টার অফ নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়ার সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় অসমে উল্লুক বা হুলক গিবনদের যে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ চারণভূমি চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটিই কার্বি আংলং-এর মধ্যে পড়ে। তাদের সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, রাজ্যের মোট হুলক গিবনের ৬৫ শতাংশই কার্বি আংলং অরণ্যের বাসিন্দা। সেখানে ৪৬৩০টি পশ্চিমি হুলক গিবনের বাস। অত্যন্ত লাজুক প্রকৃতির এই বাঁদরের উপরে নজরদারি চালানো ও তাদের সংরক্ষণ করা বেশ সমস্যার কাজ। এখানে দু’টি এলিফ্যান্ট রিজার্ভও রয়েছে, আছে বাঘও। অরণ্যে নজরদারি চালানো ও প্রথম তফশিলভুক্ত এই সব প্রাণীর সংরক্ষণের জন্য যে সব আইন রয়েছে, চোরাশিকার ঠেকাতে ও প্রাণীদের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য যে পরিকাঠামো ও যন্ত্রাদি ব্যবহার করা হয় তার পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ অনেক বনরক্ষীরই নেই। সেই কারণে প্রাইমেট রিসার্চ সেন্টার, বন দফতর, কার্বি আংলং স্বশাসিত পরিষদ, পিপল্স ট্রাস্ট ফর এনডেঞ্জার্ড স্পিসিস ও ইউএস ফিশ্ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসেস যৌথ উদ্যোগে ফরেস্ট স্কুলে এই কর্মশালার আয়োজন করে। কী ভাবে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বা ছোট শ্বাপদ, সরীসৃপ, উভচরদের সুমারি চালানো হয় তা শেখানো হয়। কী ভাবে ব্যবহার করতে হয় জিপিএস যন্ত্র, কেমন করে টহল দিলে শিকারিদের গতিবিধি আগাম আঁচ করা সম্ভব, কী ভাবে বিপন্ন প্রাণীকে উদ্ধার করা যাবে তাও এই কর্মশালায় শেখানো হয়।