ইনফোসিস কর্মী খুন

বোবা দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল যাত্রীরা, ক্ষোভ বাবার

ব্যস্ত প্ল্যাটফর্মে আততায়ীর ছুরির আঘাতে লুটিয়ে পড়েন বছর চব্বিশের তরুণী। দুষ্কৃতীকে ঠেকানো তো দূর অস্ত্‌, ক্ষতবিক্ষত সহযাত্রীকে সাহায্যের জন্যও এগিয়ে আসেননি কেউ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৬ ০৩:১৫
Share:

এস স্বাতী

ব্যস্ত প্ল্যাটফর্মে আততায়ীর ছুরির আঘাতে লুটিয়ে পড়েন বছর চব্বিশের তরুণী। দুষ্কৃতীকে ঠেকানো তো দূর অস্ত্‌, ক্ষতবিক্ষত সহযাত্রীকে সাহায্যের জন্যও এগিয়ে আসেননি কেউ। কেউ বা পাশ কাটিয়ে ছুটেছেন ট্রেন ধরতে। শুক্রবার চেন্নাইয়ের নাঙ্গামবক্কম স্টেশনে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রায় দু’ঘণ্টা পড়েছিলেন ইনফোসিস কর্মী এস স্বাতী। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মেয়ের মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলে সেই রেল যাত্রীদের বিরুদ্ধে তাই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্বাতীর বাবা সান্তনা গোপাল কৃষ্ণণ। তাঁর আক্ষেপ, রেলযাত্রীরা ঠুঁটো দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে না থাকলে হয়ত মেয়েটাকে মরতে হত না।

Advertisement

দিন দুপুরে চেন্নাইয়ের ভিড় উপচানো স্টেশনে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী খুনে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্বাভাবিক ভাবেই। নাঙ্গামবক্কম স্টেশন চেন্নাইয়ের অন্যতম ব্যস্ত স্টেশনগুলির মধ্যে একটি। এই রকম একটি স্টেশনে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় সংশয়ের মুখে যাত্রী সুরক্ষার প্রসঙ্গটিও। এই পরিস্থিতিতে মেয়ের মৃত্যুর জন্য রেলযাত্রীদের উদাসীনতাকেও কাঠগড়ায় তুলছেন স্বাতীর বাবা। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বোবা দর্শকদের মত রেলযাত্রীদের জন্যই মেয়েকে আর ফিরে পেলাম না।’’ তিনি জানান, মৃত্যুর পর অঙ্গ দানের ইচ্ছা ছিল স্বাতীর। সন্তানহারা বাবার ক্ষোভ, ‘‘যদি ওর অঙ্গ দান করতে পারতাম তাহলে সেই অঙ্গ নিয়ে উপকৃত মানুষগুলোর মধ্যেও হয়ত মেয়েকে খুঁজে পেতাম।’’ যদিও সে সুযোগ হয়নি। পুলিশ এসে যখন দেহটি উদ্ধার করে, তত ক্ষণে দু’ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে।

স্বাতী খুনের পর চার দিন কেটে গেলেও ধরা পরেনি দুষ্কৃতী। সোমবার এই কারণে পুলিশকে তীব্র ভর্সৎনাও করেছ মাদ্রাজ হাইকোর্ট। আদালতের প্রশ্ন, ‘‘ঘটনার সময় কোথায় ছিলেন আপনাদের অফিসাররা। দু’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মেয়েটা পরে ছিল স্টেশনে। যেন প্রদর্শনী চলছে। এমনকী মৃতদেহেরও মর্যাদা প্রাপ্য।’’

Advertisement

এই তিরস্কারের পরেই পরেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। খুনের কিনারা করতে তৈরি হয়েছে আটটি বিশেষ বাহিনী। আগামী দু’দিনের মধ্যে হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঘটনাস্থলে কোনও ক্যামেরা না থাকলেও আশপাশ থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ব্যাকপ্যাক কাঁধে এক যুবক হন্তদন্ত হয়ে স্টেশনে ঢুকছে। পরে দৌড়ে তাকেই স্টেশন থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। এই যুবককে এখন খুঁজছে পুলিশ। অপরাধীকে ধরার জন্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে তারা। প্রয়োজনীয় কোনও রকম তথ্য পেলে তা জানানোর জন্য ছ’জন পুলিশ অফিসারের ফোন নম্বরও প্রকাশ করা হয়েছে। পুলিশের আশ্বাস, ঠিক পথেই এগোচ্ছে তদন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন