আলোচনা: মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং শরদ পওয়ারের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ সরিয়ে রেখে শুধু জাতীয় রাজনীতির লক্ষ্যের কথাই তৃণমূলের ব্রিগেড মঞ্চে শুনিয়ে গেলেন কংগ্রেস নেতারা। আগের দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী সমাবেশকে সমর্থন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। এআইসিসি-র দূত হিসেবে শনিবার মল্লিকার্জুন খড়্গে ব্রিগেডে নিয়ে এসেছিলেন সনিয়া গাঁধীর বার্তা। তৃণমূলের সমর্থনে বাংলা থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আবার বিজেপিকে হারাতে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তাবের পক্ষে সওয়াল করে গিয়েছেন।
দিল্লির উড়ান দেরি করায় ব্রিগেডে সমাবেশ শুরু হয়ে যাওয়ার বেশ কিছু ক্ষণ পরে এ দিন ময়দানে পৌঁছন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা খড়্গে। সঙ্গে করে তিনি এসেছিলেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়ার বার্তা। যেখানে সনিয়া বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার কাঠামো ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সংবিধান, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রক্ষা করার জন্যই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে পরাস্ত করা প্রয়োজন। রাহুলের মতো তাঁর মা-ও মমতার উদ্যোগে বিরোধী ঐক্যের সমাবেশের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন।
সনিয়ার বার্তার বাইরে তাঁর নিজের বক্তব্যেও মোদী-অমিত শাহদের কার্যকলাপকেই কড়া আক্রমণ করেছেন খড়্গে। রাজ্যে শাসক তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধী কংগ্রেসের লড়াই প্রসঙ্গে কোনও কথা ছিল না তাঁর মুখে। প্রদেশ কংগ্রেস প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান অধীর চৌধুরীর ব্যাখ্যা, ‘‘বিজেপি-বিরোধী সভা বলেই হাইকম্যান্ড ওখানে মল্লিকার্জুনজি’কে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
সমাবেশের পরে খড়্গে গিয়েছিলেন বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে। রাজ্য নেতাদের তিনি বলেছেন, হাইকম্যান্ডের দূত হিসেবে তাঁকে যা বলতে বলা হয়েছিল, ব্রিগেডে তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেছেন শুধু। এর পরে লোকসভা ভোটে রাজ্যে জোট বা সমঝোতার ক্ষেত্রে কী হবে? খড়্গের জবাব, ‘‘এখানে আমি সর্বভারতীয় দলের বার্তা নিয়ে এসেছিলাম। রাজ্যে জোট কার সঙ্গে হবে না হবে, রাজ্য নেতৃত্বই প্রথমে তা ঠিক করবেন। এক একটা রাজ্যে এক এক রকম পরিস্থিতি হয়। উত্তরপ্রদেশে এসপি-বিএসপি জোট করেছে।’’
খড়্গে যখন নির্বাচনী সমঝোতার ভার রাজ্যের হাতে ছাড়ার কথা বলছেন, সিঙ্ঘভি আবার লোকসভা ভোটে রাজ্য রাজনীতির বাধ্যবাধকতার ঊর্ধ্বে ওঠার পক্ষে সওয়াল করেছেন। ব্রিগেডে ‘ইন্দ্রধনু ঐক্যে’র পক্ষে সওয়াল করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সব কেন্দ্রে বিরোধীদের এক জনই প্রার্থী, এটা ভাল যুক্তি। তথ্য বলছে, ভোট বিভাজনের সুবিধা এর আগে বিজেপি পেয়েছে। ইন্দ্রধনু ঐক্যের উদ্দেশ্যই হল ভোট বিভাজন আটকে ওই অন্যায় সুবিধা বিজেপিকে নিতে না দেওয়া।’’ ভোট বিভাজন আটকানো গেলে বিজেপির কী হাল হতে পারে, উত্তরপ্রদেশের ফুলপুর, গোরক্ষপুরে তা দেখা গিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন সিঙ্ঘভি।