বিরল দৃশ্য তৈরি করে দিল শুক্রবারের সংসদ মার্গ! মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাম জমানার সঙ্গে তুলনা টেনে তৃণমূল সরকারের সাফল্যগাথা শোনাচ্ছেন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার আগে ২০১০-এ চাষিদের আয় ছিল বছরে ৯০ হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে তিন গুণ হয়েছে। চাষিদের আয় এখন বছরে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। ওই মঞ্চে বসেই সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি শুনে চলেছেন সে সব।
তৃণমূল জমানায় রাজ্যে শিল্পায়নের দাবি ও কৃষকদের ক্ষোভ নিয়ে গত কালই সিপিএমের দু’টি গণসংগঠন সিঙ্গুর থেকে রাজভবন অভিযান করেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আজ দিল্লির সংসদ মার্গে সেই কৃষকদেরই ক্ষোভ নিয়ে এক মঞ্চে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ও তৃণমূলের দীনেশ।
যে কৃষকসভা ও খেতমজুর সংগঠন বৃহস্পতিবার সিঙ্গুর থেকে রাজভবন অভিযান করেছিল, আজও সেই সংগঠনের নেতা-সদস্যেরা হাজারে হাজারে লাল ঝান্ডা নিয়ে হাজির ছিলেন সংসদ মার্গে। তাঁদের উদ্দেশ্যেই দীনেশ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের জন্য তাঁর মন থেকে ভালবাসা পাঠিয়েছেন। উনি জানিয়ে দিতে বলেছেন, কৃষক ভাইদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বলিদানেও রাজি।’’
সর্বভারতীয় কিষাণ সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির নেতারা সব রাজনৈতিক দলের নেতাকেই তাঁদের মঞ্চে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, দলের হয়ে দীনেশ হাজির থাকবেন। ইয়েচুরির পক্ষে বিরোধী জোটের এই মঞ্চ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। বিশেষ করে সিপিএমের কৃষক সভাই যেখানে সমাবেশের অন্যতম উদ্যোক্তা।
সেখানে দীনেশ বলেছেন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের সাফল্যের কথা। আর ইয়েচুরি বাংলার প্রসঙ্গ এড়িয়ে শুধু মোদী সরকারকেই নিশানা করেন এ দিন। অভিযোগ তোলেন, পাঁচ বছর অন্তর ভোট এলেই বিজেপির লোকজনেরা কৃষকদের সমস্যা থেকে নজর সরাতে রামমন্দিরের ধুয়ো তোলেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদীকে পরোক্ষে ‘পকেটমার’ বলে কটাক্ষ করে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘প্রথমে গরিবের পকেট কেটে পরে ভোটের প্রতিশ্রুতি দেবেন।’’ রাজনীতির যুদ্ধে ফের মহাভারতের উপমা টানেন কমিউনিস্ট নেতা। বলেন, ‘‘আমাদের উল্টো দিকে কৌরব বাহিনী রয়েছে। মহাভারতে কৌরবদের দু’ভাইয়ের নামই লোকে মনে রাখে বেশি। একই ভাবে বিজেপি সব থেকে বড় দল হলেও শুধু নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহ, দু’জনের নামই শোনা যায়।’’