রাজ্য বিধানসভার ‘নিজস্ব’ নিয়ম মেনে ত্রিপুরা বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসে বিরোধী দলের মর্যাদা দিচ্ছেন না স্পিকার। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের পরিষদীয় নেতা দিবাচন্দ্র রাংখলও পাচ্ছেন না বিরোধী দলনেতার মর্যাদা। আজ ত্রিপুরা বিধানসভার স্পিকার রমেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেন।
সাধারণ ভাবে লোকসভা, রাজ্যসভা বা অন্য বিধানসভাগুলিতে নিয়ম হচ্ছে: মোট সদস্য সংখ্যার এক-দশমাংশ সদস্য কোনও দলের থাকলেই সেই দলকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া হয়। সেই দলের সংসদীয় বা পরিষদীয় নেতা পান বিরোধী দলের মর্যাদা। একক ভাবে বর্তমান লোকসভায় কংগ্রেসের এক-দশমাংশ সদস্য না থাকায় তারা বিরোধী দলের মর্যাদা পায়নি। লোকসভায় কংগ্রেস দলের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন বিরোধী দলনেতার মর্যাদা দিতে অস্বীকার করেন।
ত্রিপুরা বিধানসভার স্পিকার জানান, ত্রিপুরা ছোট রাজ্য। সদস্য সংখ্যা মাত্র ৬০। সেই কারণেই কোরামের ক্ষেত্রে এখানে আলাদা নিয়ম প্রযোজ্য। অন্তত ১০ জন সদস্য না থাকলে ত্রিপুরা বিধানসভায় কোরাম হয় না। স্পিকার বলেন, ‘‘ত্রিপুরা বিধানসভার নিয়ম অনুসারেই তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও বিধায়ককেই বিরোধী দলনেতার মর্যাদা দেওয়া যাচ্ছে না।’’ ত্রিপুরার ক্ষেত্রে নিয়মটা কী? স্পিকারের ব্যাখ্যা: রাজ্য বিধানসভার নিয়ম অনুসারে, ‘কোরাম’-এর অর্থ ১০ জন সদস্য। সুনির্দিষ্ট ভাবে কম পক্ষে ১০ জন সদস্য না থাকলে কোনও দল বিরোধী দলের মর্যাদা পাবে না, রাজ্য বিধানসভার নিয়মে সে কথাই পরিষ্কার উল্লেখ করা রয়েছে। তৃণমূলের রয়েছে মোট ছ’জন সদস্য। আর বিরোধী দলের মর্যাদা না পেলে, সেই দলের নেতা বিরোধী দলনেতার মর্যাদা পেতে পারেন না। বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে রাজ্য তৃণমূলের ছয় বিধায়ক বিধানসভায় থাকবেন।
বিধানসভায় তৃণমূলকে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া এবং বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাংখলকে বিরোধী দলনেতার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে তৃণমূলের তরফে স্পিকারকে কয়েক দিন আগে চিঠি দিয়েছিলেন ত্রিপুরায় দলের চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী। তার প্রেক্ষিতেই স্পিকার তাঁর সিদ্ধান্তের কথা তৃণমূলের চেয়ারম্যানকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আজ জানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি এটাও জানান, তৃণমূল এবং কংগ্রেস, দুই দলের বিধায়কদের বসার জন্য বিধানসভা ভবনে আলাদা আলাদা ঘর দেওয়া হবে। এ দিকে, গত কয়েক দিন ধরেই সভায় বিরোধী দলনেতার মর্যাদা পাওয়ার প্রশ্নে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছিল। সেই জটিল প্রশ্নের কার্যত সমাধান হলেও তৃণমূল স্পিকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না। ত্রিপুরায় দলের চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্পিকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ-আদালতে যাওয়ার জন্য দলীয় স্তরে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি।’’