Mamata Banerjee

TMC: কংগ্রেসের সঙ্গে সংসদে সমন্বয়েও ‘না’ তৃণমূলের

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কংগ্রেস তথা রাহুল গাঁধী সম্পর্কে তৃণমূলের গোড়া থেকেই দেখা যাওয়া ‘অ্যালার্জি’ এ বার পুরোদস্তুর সংঘাতে পরিণত

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫৮
Share:

— ফাইল ছবি

সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে কংগ্রেসের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয়ের কোনও প্রশ্ন নেই। এমনকি কংগ্রেসের কোনও সাংসদের ডাকা বিরোধী নেতাদের বৈঠকেও কোনও প্রতিনিধি পাঠাবে না তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃণমূল শীর্ষ সূত্রে এ খবর পাওয়া গিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে থাকাকালীনই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পতাকা উড়িয়েছিল তাঁর দল। মেঘালয় কংগ্রেসে বড় ভাঙন ধরিয়েছে তৃণমূল। মমতা দিল্লি এসে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করা দূরস্থান, উল্টে কামান দেগেছেন কংগ্রেসের দিকে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কংগ্রেস তথা রাহুল গাঁধী সম্পর্কে তৃণমূলের গোড়া থেকেই দেখা যাওয়া ‘অ্যালার্জি’ এ বার পুরোদস্তুর সংঘাতে পরিণত। সংসদের আসন্ন অধিবেশনেও তার জের চলবে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মেঘালয়-কাণ্ডে ‘আহত’ কংগ্রেস বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির কৌশল স্থির করেছিল। সেখানেও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে জানিয়েছিলেন, তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয় করতে চান। যদিও তাতে আপত্তি ছিল কংগ্রেসের লোকসভা নেতা অধীর চৌধুরীর। কিন্তু এই সংক্রান্ত প্রশ্নই এ বার আপাতত অবাম্তর হয়ে গেল।
তৃণমূলের এক শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, “আসন্ন সংসদীয় অধিবেশনে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সমন্বয় হবে না। কংগ্রেসের ঘরে আমরা কোনও বিরোধী বৈঠক করতে যাব না। এর আগের অধিবেশনে লোকসভা এবং রাজ্যসভার দলীয় নেতারা না গেলেও অনেক সময়ে কংগ্রেসের ডাকে আমাদের মুখ্য সচেতক অথবা নবীন সাংসদদের পাঠানো হয়েছিল। এ বার তা-ও হবে না।”
অধীর অবশ্য বলছেন, “রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে খড়্গে বৈঠক ডাকেন। সেটাই প্রথা। তৃণমূল যদি নিজেদের প্রধান দেখাতে চায়, তা হলে তার জন্য তাদের প্রধান বিরোধী দল হতে হবে। সে ক্ষেত্রে যে ভাবে প্রশান্ত কিশোরকে দিয়ে আমাদের বিধায়ক ভাঙাচ্ছে, সে ভাবে রাজ্যসভাতেও কংগ্রেস সাংসদ ভাঙাক তৃণমূল!’’
সোমবার তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসবে দলের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর মতো সাংসদেরা। সেখানেও কংগ্রেসের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয় না করার সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার ডেরেক বলেন, “সংসদে যে বিষয়গুলি নিয়ে আমরা সরব হব, তা আমাদের নিজেদের বেছে নেওয়া। পেট্রল-ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধি, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা, কৃষক আন্দোলনে ৭০০ জন মৃত চাষির ক্ষতিপূরণ, লখিমপুর খেরির ঘটনায় দোষীদের শাস্তির মতো বিষয়গুলি নিয়ে তৃণমূল সব সময়ই সরব। অনেক ক্ষেত্রে এ সব নিয়ে বিরোধিতায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছি। কংগ্রেসের ঘরে গিয়ে এ নিয়ে সমন্বয় করার কোনও প্রয়োজন নেই।” পাশাপাশি ডেরেক বলেন, “ফোনে আড়ি পাতার বিষয়টি নিয়ে সরকার জবাব দেয়নি। পুরো বর্ষাকালীন অধিবেশনের সময় সেই কারণে নষ্ট হয়েছে। এ বারেও আমাদের দাবি, পেগাসাস নিয়ে জবাব দিন প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।”
আজ সংসদের সেন্ট্রাল হলে সংবিধান দিবস অনুষ্ঠান ‘বয়কট’ নিয়েও তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সংঘাত স্পষ্ট। খড়্গে সকালেই বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ সমস্ত বিরোধী দলের সঙ্গে সমন্বয় করে আজ ওই অনুষ্ঠান বয়কট করা হয়েছে। কিন্তু তার জবাবে এক তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, “কংগ্রেস আমাদের সঙ্গে কোনও সমন্বয় করেনি। তারা এনসিপি ডিএমকে-র মতো শরিক দল এবং বাম, আরজেডি-র মতো বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলেছে। আমরা সংবিধান দিবসে সেন্ট্রাল হলে ছিলাম না, কারণ, আমাদের কোনও সাংসদ দিল্লিতে ছিলেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন