রাফাল নিয়ে অস্বস্তি বাড়ল।—ফাইল চিত্র।
কয়েক মাস আগেই প্রশ্ন উঠেছিল, রাফাল-চুক্তি নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক বাধলেও তৃণমূল কেন নীরব! সেই প্রশ্নের অবকাশ রইল না আর। রাফাল বিতর্কে আজ পুরোপুরি রাহুল গাঁধীর পাশে দাঁড়াল তৃণমূল। কংগ্রেসের পাশাপাশি তাদের সাংসদেরাও আজ সংবাদপত্রে প্রকাশিত রাফাল সংক্রান্ত নতুন তথ্য নিয়ে লোকসভায় সরব হলেন। ওই খবরের প্ল্যাকার্ড হাতে নামলেন ওয়েলে। কংগ্রেসের সঙ্গে গলা মিলিয়ে স্লোগানও দিলেন।
লোকসভায় রাফাল প্রশ্নে মোদী সরকারকে তীব্র ভাবে বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
এ দিকে দিল্লিতে জোট নিয়ে ফয়সালা না হলেও রাফাল প্রশ্নে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াল অরবিন্দ কেজরীবালের দল আপও। তাদের সাংসদ সঞ্জয় সিংহ সিবিআইকে একটি চিঠি লিখেছেন। বক্তব্য, ‘‘রাফাল চুক্তির মাধ্যমে রাজস্বের বিপুল ক্ষতি করার সঙ্গে যাঁরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে— প্রধানমন্ত্রী-সহ সেই সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধেই সিবিআই একটি এফআইআর দায়ের করুক।’’
সমর্থন চেয়ে এ দিন তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল কংগ্রেসের তরফেই। কে সি বেণুগোপাল লোকসভায় কংগ্রেসের চিফ হুইপ। তিনি আজ সকালে তৃণমূলের সাংসদদের সঙ্গে দেখা করে বলেন, ‘‘আমরা রাফাল নিয়ে সংসদ অচল করতে চাইছি। আপনারা আমাদের সমর্থন করুন।’’ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক সিবিআই-পুলিশ বিতর্কে রাহুল যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে আজ তাঁকে সমর্থন না-করার কোনও কারণই নেই। তাই পূর্ণ উদ্যমে
ওয়েলে নেমে স্লোগান দিয়েছেন মমতার সাংসদেরা।
সৌগত রায়ের কথায়, ‘‘চৌকিদার চোর হ্যায়— এই ধ্বনি এখন গোটা দেশে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।’’ লোকসভায় তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘সংবাদপত্রের রিপোর্টের বক্তব্য, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আপত্তি জানিয়ে বলেছিল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় রাফাল কেনাবেচা নিয়ে গন্ডগোল পাকাচ্ছে। এটা স্পষ্ট যে, বাযুসেনার অধীনে যখন একটি কমিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে, তখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিশেষত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল প্যারিসের সঙ্গে সমান্তরাল দরকষাকষি চালাচ্ছিলেন।’’ সৌগত বলেন ‘‘এই সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে চলে আসার পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী অধিবেশনের মুখোমুখি হতে চাইছেন না। তাই চলে গিয়েছেন। সংসদে আসুন, দয়া করে
পালিয়ে যাবেন না।’’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী অবশ্য পরে লোকসভায় মুখ খোলেন নিয়ে। পাল্টা আক্রমণ করেন রাহুলকে।
ওয়েলে নেমে আজ সবচেয়ে বেশি গলা ফাটিয়েছেন তৃণমূলের আর এক সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সংবাদপত্রটি প্রমাণ করে দিল, প্রধানমন্ত্রী গত কাল লোকসভায় অসত্য বক্তৃতা দিয়েছেন। যে ভাবে একটি বেসরকারি সংস্থাকে টাকা এবং সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তা দেশের সব চেয়ে বড় দুর্নীতির মধ্যে পড়ে।’’