আয় বাড়াতে এ বার চাষেরও ভাবনা রেলে

রেল ইয়ার্ডে ট্রাক দাঁড় করিয়ে জিরিয়ে নেন চালক-খালাসিরা। গাড়ি চুরির ভয় নেই। জল, আলো, বিশ্রামের জায়গাও রয়েছে। সুলভ পার্কিং! কিন্তু তা থেকে অবশ্য রেলের কোনও আয় নেই।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৫২
Share:

রেল ইয়ার্ডে ট্রাক দাঁড় করিয়ে জিরিয়ে নেন চালক-খালাসিরা। গাড়ি চুরির ভয় নেই। জল, আলো, বিশ্রামের জায়গাও রয়েছে। সুলভ পার্কিং! কিন্তু তা থেকে অবশ্য রেলের কোনও আয় নেই।

Advertisement

রেল ইয়ার্ডের মতো লাইনের ধারেও পড়ে রয়েছে প্রচুর পতিত জমি। তারও ব্যবহার নেই। রেলের জমিতে কিংবা পাঁচিলে দিব্যি পোস্টার সেঁটে দিয়ে যায় অনেকে। বিনামূল্যে এমন বিজ্ঞাপনের জায়গা কে ছাড়ে! লোকে সুবিধা নিলেও রেলের আয় কিন্তু কার্যত শূন্য! তাই এ বার পতিত জমিকে কাজে লাগিয়ে আয় বাড়ানোর কথা ভাবছে রেল। কী ভাবে?

রেল কর্তারা বলছেন, পতিত জমি রেলের গ্রুপ ‘সি’ এবং ‘ডি’ কর্মীদের চাষের জন্য দেওয়া হবে। তাতে জমির ব্যবহার যেমন বাড়বে তেমনই খাদ্যশস্যের উৎপাদনও বাড়বে। এর পাশাপাশি রেল ইয়ার্ডে লরিপিছু ‘পার্কিং ফি’ চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। রেল স্টেশন এবং জমি বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করেও আয় বাড়ানো যেতে পারে। বড় বড় স্টেশনে ইন্টারনেট পরিষেবা, মোবাইল অ্যাপ, ভিডিও গেমসের মাধ্যমেও আয় বাড়ানোর উপায় ভাবা হয়েছে। তা ছাড়া, রেলের পর্যটন বিকাশেও জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

Advertisement

যাত্রী পরিবহণে রেলকে গোড়া থেকেই ভর্তুকি দিতে হয়। সেই ঘাটতি মেটাতে এত দিন পণ্য পরিবহণেই ভরসা করত রেল। কিন্তু ইদানীং তাতেও তেমন আয় হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আয় বাড়ানোর নতুন উপায় খুঁজছে রেল। পোশাকি ভাষায় যার নাম ‘নন-ফেয়ার রেভিনিউ আর্নিং’। চলতি বছরেই এই বিষয়ে নতুন একটি ডিরেক্টরেট খোলা হয়েছে রেল বোর্ডে।

সম্প্রতি কলকাতার একটি ইয়ার্ডে পরিদর্শনে যান রেলের কয়েক জন অফিসার। সেখান থেকেই ট্রাক পার্কিংয়ের মাধ্যমে টাকা আদায়ের বিষয়টি মাথায় আসে। এক অফিসার বলছেন, ‘‘রাস্তায় দাঁড় করালে তো এত সুবিধা মিলত না। উল্টে হয় পার্কিং ফি, না হয় পুলিশকে নজরানা দিতে হতো। এখানে সুবিধার বিনিময়ে টাকা নেওয়া হবে।’’

রেলের অনেকে বলছেন, আয় বাড়াতে বোর্ড এতটাই মরিয়া যে সামান্য বিষয়েও জোর দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের এক জন জানান, শহরতলি কিংবা মফস্সলে স্টেশনের কাছে বেআইনি সাইকেল, মোটরবাইক পার্কিং লট গড়ে স্থানীয় কিছু লোকজন পয়সা আদায় করে। ওই সাইকেল, মোটরবাইক পার্কিং রেল তৈরি করলে দৈনিক আয় ভালই হবে।

পণ্য পরিবহণেও বেশ কিছু নতুন বিষয় ভাবা হয়েছে। এত দিন ইস্পাত, সিমেন্ট, তেল, কয়লা ইত্যাদির মতো বিরাট পরিমাণের মালের পরিবহণের জন্যই ভাড়া নিয়ে মালগাড়ি চলতো। এ বার অল্প ওজনের যে কোনও পণ্যও পরিবহণেও প্রস্তুত হচ্ছে রেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন