প্রতীকী ছবি।
ছোটার জন্য তৈরি ‘সোলার’ ট্রেন।
আগামিকাল দিল্লি থেকে শহরতলির রুটে চলা ডিইএমইউ (ডিজেল-চালিত লোকাল) ট্রেনে প্রথম বার সৌরশক্তি ব্যবহার করতে চলেছে রেল মন্ত্রক। প্রাথমিক ভাবে এই ট্রেনগুলি চলবে গাজিয়াবাদ-দিল্লি-গুরুগ্রামের মধ্যে। চলতি বছরে আরও অন্তত চার-পাঁচটি এই ধাঁচের ট্রেন চালানোর কথা ভাবা হয়েছে।
সৌরশক্তি অবশ্য এই ট্রেনের চাকা ঘোরাবে না। ডিইএমইউ ট্রেনগুলির মাঝখানের অংশে একটি ডিজেল জেনারেটর থাকে, যা কামরাগুলিতে আলো-পাখা ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। সেই কাজই এ বার করবে সৌরশক্তি। এর জন্য প্রাথমিক ভাবে যে লোকাল ট্রেনগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে, সেগুলির প্রতিটি কামরার ছাদের দু’দিকে বসেছে ১৬টি করে সৌর প্যানেল। যাদের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সাড়ে ৪ কিলোওয়াট। এই প্যানেল থেকে ব্যাটারির মাধ্যমে বিদ্যুৎ যাবে কামরাগুলিতে। ফলে বৃষ্টির সময়ে বা রাতে কোনও সমস্যা হবে না। সৌর-ট্রেন পাওয়ায় অবশ্য শিকে ছিঁড়ছে না পশ্চিমবঙ্গের। কারণ মন্ত্রক জানিয়েছে, পূর্ব বা দক্ষিণ পূর্ব রেলে ডিইএমইউ ট্রেন প্রায় উঠেই গিয়েছে। ট্রেনে সৌর প্যানেল বসানোর কিছু পরীক্ষা আগেও হয়েছে। মন্ত্রক সূত্র জানিয়েছে, এ বার প্রাথমিক পর্বে সাফল্য এলে দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতেও এই পদ্ধতি ব্যবহারের কথা ভাবা হবে। এতে এক দিকে আর্থিক সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি, প্রতি বছর পরিবেশে কয়েক লক্ষ টন কার্বন নিঃসরণের জন্য রেলকেই দায়ী করা হয়। সেই অভিযোগের ভার কিছুটা লাঘব হবে।
গত কয়েক বছর ধরে পরিবহণ খরচ কমাতে চাইছে রেল। গত বছরে এই খাতে রেলের খরচ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ১২ হাজার কোটি গিয়েছে বিদ্যুতের বিল মেটাতে। হাই-স্পিড ডিজেলের দাম মেটাতে খরচ হয়েছে বাকি ১৮ হাজার কোটি। রেল এখন এই ডিজেলের ব্যবহার যথাসম্ভব কমাতে চাইছে।
রেলের হিসেবে, ছয় কামরার ডিইএমইউ ট্রেনে প্রতি বছরে ২১ হাজার লিটার ডিজেল লাগে। সেটা বন্ধ হলে ট্রেন-পিছু ১২ লক্ষ টাকা বাঁচবে। রেলের এক কর্তার কথায়, ‘‘ডিজেলের ব্যবহার যত কমবে, তত কমবে ট্রেন চালানোর খরচ। সাশ্রয় হবে বিদেশি মুদ্রা।’’ ডিজেল খাতে আগামী কয়েক বছরে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে রেল। সেই লক্ষ্য ছুঁতে ভবিষ্যতে আরও বেশি সৌর-ট্রেন চালানোয় জোর দিয়েছে মন্ত্রক।