নারদ-কাণ্ডের মোকাবিলায় নেমে গোড়া থেকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ তুলে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের তরফে এ-ও দাবি তোলা হয়েছিল, ভিডিও ফুটেজটি আদতে ভুয়ো। সেই ধারা বজায় রেখে বুধবার সংসদে আরও জোরালো তত্ত্ব তুলে ধরতে গিয়ে কিন্তু পাল্টা প্রশ্নের জালে জড়িয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল।
মঙ্গলবার রাতে একটি সংবাদ চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, গোটা ষড়যন্ত্রে বিদেশি অর্থের যোগ রয়েছে। এ দিন রাজ্যসভায় তৃণমূল নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন কার্যত তারই পুনরাবৃত্তি করেন। উপরন্তু দুবাইয়ে যে হেতু ম্যাথু স্যামুয়েলের সংস্থার একটি অফিস রয়েছে, তা-ই পুরো ঘটনার উপরে দুবাই-যোগ আরোপিত করে তিনি বলেন, ‘‘এই ষড়যন্ত্রে দুবাইয়ের টাকা ব্যবহার করা হয়েছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘দুবাই থেকে চার-পাঁচ বার ফোনও এসেছিল।’’ যদিও কার কাছে এসেছিল, তা ডেরেক স্পষ্ট করেননি! কিন্তু তৃণমূল নেতার যুক্তি শুনে হইহই করে উঠেছে বাম-কংগ্রেস। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূল জানল কী করে যে, ওটা বিদেশের টাকা? তার মানে নিশ্চয়ই টাকাটা ওঁরা নিয়েছেন। তার উপরে হাওয়ালা মারফত দুবাই থেকে টাকাটা এসে থাকলে তো আরও মারাত্মক! কারণ, তাতে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত।’’ আর সে ক্ষেত্রে ঘটনার কেন্দ্রীয় তদন্ত করানোর পক্ষপাতী প্রদীপবাবু। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী টিপ্পনি কেটেছেন, ‘‘ডি কোম্পানির টাকাও হতে পারে।’’ অধীরবাবুর পর্যবেক্ষণ, ‘‘ঘটনা হল, তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়কেরা একবারও বলছেন না যে, নারদের থেকে টাকা নেননি। বরং সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে ভাবে টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাতে পরিষ্কার যে, টাকাগুলো ওঁরা নিয়েছেন!’’
ডেরেক বচন প্রসঙ্গে দিল্লিতে বাম নেতৃত্বেরও বক্তব্যও মোটামুটি এক। বাম-কংগ্রেস নেতাদের মত, নারদ-কাণ্ড নিয়ে আদালতে যে সব জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে, সেখানে তৃণমূল নেতাদের এই বক্তব্যগুলিও আদালত বিচার করে দেখতে পারে।