মুখোমুখি নরেন্দ্র মোদী ও মানিক সরকার। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পি টি আই।
প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে তেমন কোনও নিশ্চিত ‘আশার বাণী’ শোনেননি বলেই জানিয়ে দিলেন উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের দূত তথা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তবে উত্তর-পূর্বের বিশেষ মর্যাদার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন।
গত কালই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ‘বিশেষ মর্যাদা’ বজায় রাখার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দরবার করেন মানিক। দিল্লি থেকে ফিরে আজ তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাই। রাজ্যের সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করতে চাই।’’ অসম ছাড়া অন্য রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাদা কথা হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই একই কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীকে, সে কথা মোদী তাঁকে জানিয়েছেন বলে মানিকবাবু জানান।
একই সঙ্গে আট মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চাইছেন মানিকবাবুরা। প্রধানমন্ত্রী এখনও সে সময় না দেওয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীরা অসন্তুষ্ট। মানিকবাবু বলেন, ‘‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের আলোচনার ভিত্তিতে চিঠি (কমন রেজিলিউশন) ২৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী মাস খানেকের মধ্যে সময় না দিতে পারায়, মানিকবাবু আবারও চিঠি দেন মে মাসের শেষ দিকে। ফোনেও বার দুয়েক কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। এর পরেই তাঁকে সময় দেওয়া হয়।
চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশে রাজ্যগুলির ‘কর ও রাজস্বের’ ভাগ ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪২ শতাংশ করায় ত্রিপুরার ভাগে কেন্দ্রীয় আর্থিক সহায়তা বাড়বে বলে মানিকবাবু স্বীকার করেন। তার পরিমাণও কয়েক হাজার কোটি টাকা। তাতে কি রাজ্য হিসেবে ত্রিপুরা ‘বিশেষ মর্যাদা’ হারালে সেই ‘আর্থিক ক্ষতি’ পুষিয়ে যাবে না? মানিকবাবু বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা, কয়েক মাসে কেন্দ্রীয় আর্থিক সাহায্যের যে প্রবণতা দেখছি, তাতে মনে হচ্ছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি চালাতে গিয়ে রাজ্যের কয়েক হাজার কোটি টাকার ঘাটতি থাকবে।’’
তাঁর আরও বক্তব্য, যে বিষয়গুলি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীরা আলাদা আলাদা ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছে দিয়েছেন, সেগুলি নিয়ে কেন্দ্রের সদ্যোজাত ‘নীতি আয়োগ’-এর সাব-কমিটি ইতিমধ্যেই আলোচনা করছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। নীতি আয়োগের রিপোর্ট এলে তার পর কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়গুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন। এখনই নির্দিষ্ট আশ্বাস দেননি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চল কাউন্সিল (এনইসি)। এনইসি’র একটি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে থাকার জন্য মানিকবাবু অনুরোধ জানিয়েছেন। সেখানেই মোদীর সঙ্গে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের একই দিনে কথা বলার সুযোগ ঘটবে। দিল্লিতে এনইসি-র একটি বৈঠক যাতে করা যায়, তার তোরজোড় শুরু হয়েছে। মোদী এনইসি-র সেই বৈঠকে থাকবেন বলে তাঁকে জানিয়েছেন বলে মানিকবাবু জানান।