কথা কম, কাজ বেশি, শিখলেন দিলীপেরা

একই স্বপ্ন নিয়ে বাংলা থেকে ত্রিপুরায় নতুন মন্ত্রিসভার শপথে হাজির হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়েরা। অসম রাইফেলসের মাঠে তারকাখচিত শপথের সাক্ষী থাকতে হাজির ছিলেন বাংলার বেশ কি‌ছু বিজেপি কর্মীও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আগরতলা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩১
Share:

রাজ্য অতিথিশালায় এ ধারে-ও ধারে হরেক মুখ্যমন্ত্রীর ভিড়! এক তলার বন্ধঘরে নতুন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সতীর্থদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ‘‘দেখলেন, ত্রিপুরার ছবিটা কী রকম পাল্টে গেল! আগে বাংলা থেকে সব দলের নেতারা আসতেন ত্রিপুরাকে উদ্বুদ্ধ করতে। এ বার ত্রিপুরা বাংলাকে পথ দেখাবে।’’ বাইরে দাঁড়িয়ে বলছিলেন সৌমেনকান্তি পাল। ত্রিপুরায় বিজেপি করেন। যে কলকাতায় সাংবাদিকতার পাঠ নিয়েছিলেন, সেখানে গেরুয়া উত্থান দেখতে চান তিনি।

Advertisement

শুধু তিনিই কেন! একই স্বপ্ন নিয়ে বাংলা থেকে ত্রিপুরায় নতুন মন্ত্রিসভার শপথে হাজির হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়েরা। অসম রাইফেলসের মাঠে তারকাখচিত শপথের সাক্ষী থাকতে হাজির ছিলেন বাংলার বেশ কি‌ছু বিজেপি কর্মীও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন বাংলায় বলছেন, ‘‘অবশেষে পাল্টেই দিলেন আপনারা!’’ বারাসত, দক্ষিণেশ্বর বা মধ্যমগ্রাম থেকে আসা কর্মীরা প্রায় লাফাচ্ছিলেন!

প্রশ্ন হল, শুধু স্বপ্ন দেখলেই তো চলে না! ত্রিপুরার মডেল বাংলায় কার্যকর করার কোনও উদ্যোগ আছে কী? বঙ্গ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুর আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি নেই। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলছেন, ‘‘ত্রিপুরা দেখিয়ে দিয়েছে, অসম্ভব বলে কিছু নেই! আমাদের ওখানে দিদিমনির তো হাঁটু কাঁপছে! এখন সিপিএমকে ধরেছেন। সিপিএম ডুবেছে ত্রিপুরায়। এ বার উনিও ডুববেন!’’

Advertisement

তৃণমূলকে ডোবানোর জন্য ত্রিপুরা বিজেপির পর্যবেক্ষক সুনীল দেওধরকে বাংলায় নিয়ে যাওয়া হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বিস্তর। দলের সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব অবশ্য বলছেন, ‘‘এ রকম কোনও পরিকল্পনা এখনও হয়নি। কৈলাসজি (বিজয়বর্গীয়) আছেন, শিবপ্রকাশজিও দেখছেন।’’ রাম মাধবের মতে, ত্রিপুরায় যে ভাবে বুথ এবং ভোটার তালিকা ধরে ধরে বিস্তারক বাহিনী রাখা হয়েছে, বাংলাতেও সেই কাজ চলছে। তবে ঠিক কত দিনে বাংলা ‘ত্রিপুরা’ হবে, তার কোনও পরিমাপ রাখেননি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

ত্রিপুরা দেখে লকেট বুঝেছেন, বিজেপি যে ভাবে এখানে মহিলা, যুব, উপজাতি-সহ সব শাখা সংগঠনকে সক্রিয় ভূমিকায় নামিয়েছিল, তার সুফল দল পেয়েছে। তৃণমূলের বাধার মুখেও বাংলায় তাঁরা একই উদ্যমে মাটি কামড়ে থাকতে চান। ত্রিপুরায় কংগ্রেস থেকে বিজেপি-তে আসা সুদীপ রায় বর্মণ বা রতনলাল নাথেরা নিজেদের অভিজ্ঞতায় জানাচ্ছেন, কোথাও কিছু ঘটলেই রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব ও অন্য নেতারা ছুটে গিয়েছেন। উত্তর-পূর্বের ছোট রাজ্যে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের মনোযোগ কাড়তে কালঘাম ছুটে যেত! বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তুলনায় অনেক সক্রিয় থেকেছেন।

মাত্র ২৭ বছরে মন্ত্রিত্ব পাওয়া সান্ত্বনা চাকমার উপলব্ধি, ‘‘শুধু কথা বললে হয় না। কাজ করলে ফল মেলে।’’ পরীক্ষা এখন দিলীপদের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন