মধ্যপ্রদেশে জোড়া ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ২৮

মধ্যপ্রদেশের রেল দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৪০ জন। রেল মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, উদ্ধার কাজ প্রায় শেষের মুখে। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লাখ ডটাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোণা করেছে রেল। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৫ ১১:২৬
Share:

দুর্ঘটনাস্থলে এএফপি-র তোলা ছবি।

মধ্যপ্রদেশের রেল দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৪০ জন। রেল মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, উদ্ধার কাজ প্রায় শেষের মুখে। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে রেল। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। এই দুর্ঘটনা নিয়ে বুধবার লোকসভায় বিবৃতি দেওয়ার কথা তাঁর। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘রেলওয়ে চিফ সেফটি কমিশনার’ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। দুর্ঘটনার জেরে মুম্বইগামী ১৯টি ট্রেনকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ৬টা ট্রেন।

Advertisement

মঙ্গলবার গভীর রাতে মধ্যপ্রদেশের হরদা স্টেশন থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মেচক নামে একটি নদীসেতুর উপরে প্রথমে মুম্বই থেকে বারাণসীগামী কামায়নী এক্সপ্রেসের শেষ চারটি কামরা বেলাইন হয়ে যায়। এর কিছু সময় পরে পটনা থেকে মুম্বইগামী জনতা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন-সহ চারটি কামরা বেলাইন হয়ে যায় ওই একই সেতুর উপরে। ভারী বৃষ্টির মধ্যে সেতু পেরোতে গিয়েই এমনটা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল। বেলাইন হওয়া কামরাগুলির কয়েকটি নদীর জলে পড়ে যায় এবং কয়েকটি সেতুর উপর ঝুলছিল বলেও রাতে খবর আসে। কিন্তু বুধবার রেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনও কামরাই নদীতে পড়ে যায়নি। কামরাগুলি শুধুমাত্র বেলাইন হয়েছে। আর আচমকা এই ঘটনা ঘটে যাওয়ায় কামরার ভিতরের ধাক্কাধাক্কিতে প্রাণ হারিয়েছেন ওই যাত্রীরা। তাঁদের মধ্যে দু’জন জানলা দিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠে সেখান থেকে বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করতে গিয়ে ওভারহেডের তারে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন বলে রেল সূত্রে খবর।

কিন্তু, একই সেতুর উপর দু’টি ট্রেন কয়েক মিনিটের ব্যবধানে বেলাইন হল কী ভাবে রেল এখন সেটাই খতিয়ে দেখছে। তাদের মতে, দু’টি কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এক, প্রবল বর্ষণে সেতুটির অবস্থা খানিকটা বিপজ্জনক হয়েই ছিল। দুই, ওই ট্রেন দু’টি যখন সেতুর উপর দিয়ে যাচ্ছিল তখন নদীতে হড়পা বান এসে ট্রেনকে বেলাইন করে দিয়েছে। দু’টি বিষয়ই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে রেল মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। তিনি জানান, ওই দুর্ঘটনার মিনিট আটেক আগে ওই দু’টি লাইন দিয়েই ট্রেন গিয়েছে। যদি লাইন খারাপ থাকত বা ভাঙা থাকত অথবা লাইনের উপর দিয়ে জল বয়ে যেত তবে সেটা ওই ট্রেনের চালকেরা জানাতেন। বা ওই ট্রেন দু’টিও দুর্ঘটনার কবলে পড়ত। তেমনটা হয়নি বলেই হড়পা বানের তত্ত্বটা উঠে আসছে বলে মত তাঁর।

Advertisement

সময়সূচি অনুযায়ী কামায়নী এক্সপ্রেস মহারাষ্ট্রের লোকমান্য তিলক স্টেশন থেকে দুপুর ১২টা৪০ মিনিটে ছেড়ে পরের দিন সন্ধের সাড়ে সাতটা নাগাদ বারাণসী পৌঁছয়। সূচি বলছে, জনতা এক্সপ্রেস পটনা থেকে রাত সাড়ে ১১টায় ছেড়ে পরের পরের দিন সকাল ১০টা৫০ মিনিটে মুম্বই পৌঁছয়। বৃষ্টিতে দু’টি ট্রেনই আস্তে চলছিল। দু’টি ট্রেনই মধ্যরাতে ভোপাল থেকে ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে হরদা স্টেশন পেরোয়। তার পরেই এই ঘটনা ঘটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন