অসুস্থ ও অনাথ মোদীরই দত্তক নেওয়া দুই গ্রাম

জুটেছিল সৌর বিদ্যুৎচালিত ১৩৫টি রাস্তার বাতি আর ৬৫০টি শৌচালয়। আড়াই বছরে জলে গিয়েছে সবই!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০৪:৫১
Share:

জুটেছিল সৌর বিদ্যুৎচালিত ১৩৫টি রাস্তার বাতি আর ৬৫০টি শৌচালয়। আড়াই বছরে জলে গিয়েছে সবই!

Advertisement

জয়াপুর ও নাগেপুর। বারাণসী জেলার পাশাপাশি এই দু’টি গ্রামকে আদর্শ গ্রাম যোজনায় দত্তক নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনেক আশায় বুক বেঁধেছিলেন গ্রাম দু’টির মানুষ, এ বার ভোল পাল্টে যাবে এলাকার। ধুন্ধমার ভোটযুদ্ধের শেষে দেখা যাচ্ছে, গ্রাম দু’টি সেই তিমিরেই। রাস্তাঘাট অন্ধকার। কারণ চুরি হয়ে গিয়েছে সৌর ব্যাটারি। আর শৌচালয়গুলিও ব্যবহারের অযোগ্য।

যা পাওয়া গিয়েছিল, তা তো গিয়েছেই, উন্নয়নের অন্য কোনও কাজও আর হয়নি, এমনই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাঁরা না পেয়েছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, না মহিলাদের কলেজ। যানবাহন ব্যবস্থার সুরাহা বা কাদাময় রাস্তার উন্নতি— হয়নি কিছুই।

Advertisement

গ্রামের সমাজকর্মী নন্দলালা মাস্টার জানাচ্ছেন, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ টেনেটুনে ক্লাস টেন পর্যন্ত পৌঁছোয়। স্নাতক স্তরে যায় ১ শতাংশ । তাঁর খেদোক্তি, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজে গ্রাম দু’টি দত্তক নেওয়ার পর ভেবেছিলাম রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্র কিছু একটা করবে। কিন্তু সেটা স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে।’’

জয়াপুরের বাসিন্দা প্রেমশঙ্কর সিংহের অভিযোগ, ‘‘আড়াই বছর আগেই আমরা প্রধানমন্ত্রী দফতরে লিখিত ভাবে দাবি জানিয়েছিলাম আমরা। জানানো হয়েছিল, স্থানীয় মহিলারা কলেজে পড়তে গেলে ২০ কিলোমিটার উজিয়ে যেতে হয় বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিংবা আরও দুরে রাম মনোহর লোহিয়া ডিগ্রি কলেজে। যান ব্যবস্থার অভাবে সেখানে যাওয়া কার্যত অসম্ভব। এখনও কোনও সাড়া মেলেনি।’’

শিক্ষার মতো রোগ সারেনি স্বাস্থ্য ও যাতায়াত ব্যবস্থারও। মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লেও এ দু’টি গ্রামে চিকিৎসা পাওয়ার জো নেই। যেতে হয় পাঁচ কিলোমিটার দূরে সরকারি হাসপাতালে। সারা দিনে একটিই বাস ছাড়ে। সকালে বেরিয়ে আশপাশের গ্রাম ঘুরে সন্ধেয় ফেরত আসে। অন্য সময় অসুস্থ হলে যেতে হয় পায়ে হেঁটে। জয়াপুর গ্রামের প্রধান শ্রীনারায়ণ পটেলের খেদ, ‘‘অনেক সময়ে রাস্তাতেই মারা যাচ্ছে রোগী।’’

দত্তক নিয়েও কেন এমন অনাথ ফেলে রাখা, সেটাই বুঝেই উঠতে পারছেন না শ্রীনারায়ণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন