পুরীতে রথযাত্রায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ২, আহত ১৫

মৃত্যু পিছু ছাড়ল না পুরীর রথযাত্রার। ভিড়ের চাপে মৃত্যু হল দু’জনের। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুরীধামে জগন্নাথদেবই এক মাত্র ভিভিআইপি। তাই তাঁর ডাকে প্রবল গরমকে উপেক্ষা করে শনিবার রথযাত্রার দিন লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে পুরী। চলতি বছর এই শতাব্দীর প্রথম নবকলেবর উত্সব। সমুদ্র শহর পুরী ছিল এ দিন ভক্তদের দখলে।

Advertisement

ঋজু বসু

পুরী শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৫ ১৫:২৩
Share:

পদপিষ্টে আহতেরা।

মৃত্যু পিছু ছাড়ল না পুরীর রথযাত্রার। ভিড়ের চাপে মৃত্যু হল দু’জনের। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

পুরীধামে জগন্নাথদেবই এক মাত্র ভিভিআইপি। তাই তাঁর ডাকে প্রবল গরমকে উপেক্ষা করে শনিবার রথযাত্রার দিন লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে পুরী। চলতি বছর এই শতাব্দীর প্রথম নবকলেবর উত্সব। সমুদ্র শহর পুরী ছিল এ দিন ভক্তদের দখলে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রায় ১৫ লাখ লোকের সমাগম হয়েছে পুরীতে। প্রশাসন সূত্রে খবর, নির্বিঘ্নেই রথযাত্রার অনুষ্ঠান শুরু হলেও, পুরীর রাজা গজপতি দিব্য সিংহ দেব দেরিতে পৌঁছন মন্দির প্রাঙ্গনে। তাই দেরিতে শুরু হয় রথের যাত্রা। ভিড় বাড়তে শুরু করে ক্রমশ। এক সময় ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় ভক্তদের। রথের রশিতে একটু হাত ছোঁয়ানোর জন্য কাড়াকাড়ি পড়ে যায় আম জনতার মধ্যে। ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দু’জনের।

জ্যৈষ্ঠ মাসে স্নানযাত্রার পর দেড় মাস ‘অনশর কাল’ চলে জগন্নাথ দেব, বলরাম দেব এবং সুভদ্রা দেবীর। পুরাণ মতে, এই সময় দেবতাদের অসুখ করে। তাই সাধারণের জন্য মন্দিরের দ্বার বন্ধ থাকে। এমনইতে ‘অনশর’কাল ১৫ দিন স্থায়ী হলেও নবকলেবরের বছরে তা স্থায়ী হয় দেড় মাস। এই সময় ব্রক্ষ্মবস্তু পুরনো বিগ্রহের মধ্যে থেকে অতি গোপনে নতুন বিগ্রহের মধ্যে স্থাপন করা হয়। এই বছর নবকলেবর উত্সব তাই দীর্ঘ দেড় মাস দেবতাদের দর্শন করতে পারেননি আম জনতা। তাই এ বছর পুরীতে ভক্তসমাগম বেশী। মন্দির বন্ধ থাকলেও। কুছ পরোয়া নেহি। নিজেদের মত করেই জগন্নাথদেবকে খুঁজে নিলেন আম জনতা।

Advertisement


রথে বিপুল জনসমাগম পুরীতে।

নিয়ম মাফিক এ দিন বেলা বারোটা নাগাদ রত্নবেদী থেকে নেমে দৈতাপতিদের কাঁধে চেপে রথে চাপেন তিন দেবতা। এই অনুষ্ঠানকে বলে ‘পাহণ্ডি বিজয়’। মন্ত্রচারণ, মঙ্গলবাদ্যের মধ্যে দিয়ে দৈতাপতিদের কাঁধে চেপে প্রথমে মন্দিরের বাইরে আসেন বলরামদেব। তার পর আসেন সুভদ্রা দেবী। সব শেষে বাইরে আসেন জগন্নাথদেব। পুরীর মন্দির সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক পশ্চিম দ্বার দিয়ে প্রথমে মন্দিরের ভিতরে ঢুকে দেবতা দর্শন করতে যান। কিন্তু ততক্ষণে তিন দেবতাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন রথে। নিদির্ষ্ট আসনে বসে অনুষ্ঠানপর্ব দেখেন রাজ্যপাল এস সি জামির এবং মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। বেলা আড়াইটে নাগাদ সোনার ঝাটায় ঝাড়ু দিয়ে রথযাত্রার সূচনা করবেন পুরীর রাজা গজপতি দিব্য সিংহ দেব। এই অনুষ্ঠানকে বলে ‘ছেড়া পহরা’। তার আগে রথে বিগ্রহদের দর্শন করে যান পুরীর শঙ্করাচার্য। ‘ছেড়া পহরা’-র পর রথের রশি টেনে রথযাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। সাড়ে তিনটে নাগাদ প্রথমে চলতে শুরু করে বলরাম দেবের রথ ‘তালধ্বজ’। মিনিট ৪৫ পর চলতে শুরু করে সুভদ্রা দেবীর রথ ‘দেব দলন’ বা ‘দর্প দলন’। সব শেষে বিকেল ৫টার কিছু পরে যাত্রা শুরু হয় জগন্নাথ দেবের রথ ‘নন্দীঘোষ’-এর। প্রশাসনের আশা, সন্ধ্যার মধ্যেই গুন্ডিচা বাড়িতে পৌঁছে যাবেন সপার্ষদ জগন্নাথ দেব। কেন না সুর্যাস্তের পর রথের যাত্রা হয় না। তখন রাস্তাতেই থেমে যাবে রথ। সেখানেই ভক্তদের মাঝে রাত কাটাবেন দেবতারা।

ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন