প্রথম দিনেই অঘটন, জাল্লিকাট্টুর বলি দুই

বন্ধ ছিল তিন বছর। প্রতিবাদ-আন্দোলনের পথ বেয়ে গত কাল মিলেছে ছাড়পত্র। আর তার ফলেই তামিলনাড়ু আজ ফের মেতে উঠল জাল্লিকাট্টুতে। যদিও উচ্ছ্বাসের রং প্রথম দিনেই খানিকটা ফিকে হয়ে গেল ৩ জনের মৃত্যু ও বিক্ষোভে। দু’জন মারা গিয়েছেন ষাঁড়ের গুঁতোয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৩
Share:

মেরিনা সৈকতে জারি প্রতিবাদ। রবিবার চেন্নাইয়ে পিটিআইয়ের ছবি।

বন্ধ ছিল তিন বছর। প্রতিবাদ-আন্দোলনের পথ বেয়ে গত কাল মিলেছে ছাড়পত্র। আর তার ফলেই তামিলনাড়ু আজ ফের মেতে উঠল জাল্লিকাট্টুতে। যদিও উচ্ছ্বাসের রং প্রথম দিনেই খানিকটা ফিকে হয়ে গেল ৩ জনের মৃত্যু ও বিক্ষোভে। দু’জন মারা গিয়েছেন ষাঁড়ের গুঁতোয়। তৃতীয় জন বিক্ষোভের সময় অসুস্থ হয়ে। আহতও নেহাত কম নয়, ১২৯।

Advertisement

তামিলনাড়ুর অনেক অংশে শুরু হলেও, ষাঁড়কে বাগে আনার এই দৌড় সর্বত্র শুরু করা যায়নি বিক্ষোভের জেরে। যেমন মাদুরাইয়ে। সেখানে স্থানীয়রা দাবি করেন, অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে মাত্র ছ’মাসের জন্য জাল্লিকাট্টুর রাস্তা খোলাটাই যথেষ্ট নয়। প্রতি বছর যাতে এই দৌড় হতে পারে, তার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করতে হবে। এবং এই দাবিতে আজও চেন্নাইয়ের মেরিনা সৈকত ছেড়ে যাননি আন্দোলনকারীরা। সৈকতে তাঁদের এই বিক্ষোভ চলছে ছ’দিন ধরে।

গত কাল অধ্যাদেশে রাজ্যপাল সই করার পরেই মুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভম জানিয়ে দেন, রবিবারই শুরু হবে জাল্লিকাট্টু। তাঁর দাবি, অর্ডিন্যান্সটি পরে আইনে পরিণত হলেই সমস্যা স্থায়ী ভাবে মিটবে। মুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভমের এই আশ্বাসকে বিশ্বাস করতে রাজি নন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের সাফ কথা, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। ফলে বিক্ষোভের মুখে পড়ে এ দিন জাল্লিকাট্টু উদ্বোধন না করেই মাদুরাইয়ের আলাঙ্গানাল্লুর থেকে ফিরতে হয় পনীরসেলভমকে। যদিও চেন্নাই ফেরার পথেও মুখ্যমন্ত্রী পনীরসেলভম সাংবাদিকদের জানান, জাল্লিকাট্টুর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে দেওয়া হয়েছে। আলাঙ্গানাল্লুরেও এই খেলা হবে। তবে কবে হবে, তা ঠিক করে দেবেন স্থানীয় মানুষই।

Advertisement

মাদুরাই সিটিতে বিক্ষোভে যোগ দিতে গিয়ে মারা যান এক ব্যক্তি। পুলিশ জানাচ্ছে, শরীরে জলের অভাবে। তবে শুধু মাদুরাইয়ে নয়, পাকাপাকি আইনি বন্দোবস্তের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে রাজ্যের অন্য কিছু স্থানেও। রাজ্যের এডিএমকে সরকারকে চাপে রাখছে বিরোধী দল ডিএমকে-ও। দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি এম কে স্ট্যালিন আজ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘অধ্যাদেশের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান বেরিয়ে আসবে, এই কথা বলা বন্ধ করুন। বরং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কোনও সমাধান সূত্র খুঁজে বার করুন, যাতে এই খেলা প্রতি বছর নির্বিঘ্নে চলতে পারে।’’

তবে পুদুকোট্টাই, ত্রিচি ও ইরোড জেলা-সহ রাজ্যের অন্যান্য অংশে আজ মহা উৎসাহেই জাল্লিকাট্টুতে মাতেন তামিলরা। প্রাথমিক হিসেব বলছে, অন্তত দশ হাজার মানুষ এতে অংশ নিয়েছেন প্রথম দিনে। কোয়ম্বত্তূরে হয় গরুর গাড়ির দৌড়। পুদুকোট্টাইয়ে ষাঁড়ের গুঁতোয় গুরুতর জখম হন দু’জন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁদের মৃত্যু হয়। এই অঘটনে ফের প্রশ্নের মুখে ষাঁড়কে বাগে আনার এই প্রাচীন খেলা।

মূলত বিপজ্জনক বলে ও পশু নির্যাতনের অভিযোগেই বন্ধ হয়েছিল জাল্লিকাট্টু। ভবিষ্যতে সেই অভিযোগ যাতে না ওঠে, তার জন্য রাজ্য সরকার আজ বেশ কিছু কড়া বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে এই খেলা নিয়ে। সিসিটিভি, পশু চিকিৎসক ও অফিসারদের নজরদারি যেগুলির অন্যতম। এ ছাড়াও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ষাঁড়ের পাশে থাকতে হবে তার মালিককে। যাতে সে ভয় না পায়। কুঁজ ধরে ঝুলে ১৫ মিটারের বেশি যাওয়া যাবে না। ষাঁড় ছোটাতে টানা যাবে না লেজও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন