UGC

শিক্ষক প্রশিক্ষণ খসড়া, গেরুয়াকরণের নালিশ

পড়ুয়াদের পড়ানোর আগে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ‘রিফ্রেশার অ্যান্ড ইনডাকশন’ কোর্সে বিষয়গুলি সম্পর্কে কী কী শিখবেন, খসড়া নির্দেশিকায় তা উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:১৪
Share:

নির্দেশিকা প্রকাশ করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। — ফাইল চিত্র।

বৈদিক যুগের অঙ্কশাস্ত্র থেকে শুরু করে বর্তমান গণিতের পঠনপাঠন-সহ প্রাচীন ভারতের জ্ঞানচর্চাকে উচ্চশিক্ষার অঙ্গ করার কেন্দ্রীয় উদ্যোগ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বাদপ্রতিবাদ চলছে। তারই মধ্যে উচ্চশিক্ষার্থীদের কী ভাবে ‘আইকেএস’ বা ‘ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম’ শেখানো হবে, সে বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণের খসড়া ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা প্রকাশ করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত চাওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতির মতোই এই খসড়া নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে শিক্ষা শিবির-সহ বিভিন্ন মহলে। এর পিছনে শিক্ষার গৈরিকীকরণের অভিসন্ধি দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।

Advertisement

খসড়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ভারতের ঐতিহ্যাগত জ্ঞানের সঙ্গে বর্তমান বিষয়গুলির সমন্বয় করতে হবে। নির্দেশিকায় সূচনায় ইউজিসি-র চেয়ারম্যান মামিদালা জগদেশ কুমার জানিয়েছেন, ভারতে শিল্প, সাহিত্য, ঐতিহ্য, প্রথা, ভাষা, স্থাপত্যবিদ্যা প্রভৃতি খুবই প্রাচীন এবং সেগুলির চর্চা গত শতাব্দীতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই তার চর্চা আবার শুরু করার দরকার। ইউজিসি তাই আধুনিক পাঠ্যবিষয়ের সঙ্গে প্রাচীন ঐতিহ্যকে মেশাতে চাইছে। বিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, অঙ্কশাস্ত্র, সমাজবিজ্ঞান, কারিগরি বিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র-সহ সব কিছুর সঙ্গে ভারতীয় ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ ঘটানো হবে।

পড়ুয়াদের পড়ানোর আগে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ‘রিফ্রেশার অ্যান্ড ইনডাকশন’ কোর্সে বিষয়গুলি সম্পর্কে কী কী শিখবেন, খসড়া নির্দেশিকায় তা উল্লেখ করা হয়েছে। খসড়ায় রয়েছে, বৈদিক যুগ থেকে শুরু করে বর্তমান গণিত পড়াতে হবে এবং তাতে গুরুত্ব দিতে হবে বৈদিক গণিতের ‘শুল্বসূত্র’-কে। জৈব রসায়ন, জৈব পদার্থবিদ্যার সঙ্গে আয়ুর্বেদের বিভিন্ন অংশ, গণিতের সঙ্গে বেদাঙ্গ ও জ্যোতিষ পড়ানোর মতো বেশ কিছু বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে নির্দেশিকায়।

Advertisement

এই বিষয়ে আগে থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটি। ওই সংগঠনের সম্পাদক তরুণকান্তি নস্কর বৃহস্পতিবার জানান, কেন্দ্রের এই উদ্যোগের ফলে শিক্ষার গৈরিকীকরণের পথ প্রশস্ত হবে। এই নির্দেশিকা অনুযায়ী পঠনপাঠন সংক্রান্ত তালিমের অঙ্গ হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি মন্দির, গুরুকুল আয়ুর্বেদিক কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে শিক্ষকদের। অন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার ব্যাপারে কোনও উল্লেখ নেই নির্দেশিকায়। তরুণবাবুর অভিযোগ, হিন্দু মহাসভা পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক গোষ্ঠী। তার প্রতিষ্ঠাতা মদনমোহন মালবীয়ের চিন্তার ভিত্তিতে শিক্ষক প্রশিক্ষণের (মালবীয় মিশন) ব্যবস্থা করাই এই খসড়া নির্দেশিকার মূল লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন