ভাগ্নিকে হত্যার অভিযোগে মামা নূর মহম্মদ মিঁয়াকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ সপ্তর্ষি জানান, পলিটেকনিকের ছাত্রী আনোয়ারা চৌধুরী তার মামার বাড়িতেই থাকত। সেখান থেকেই পড়াশোনা করত। তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর জেরে তার দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্টে আনোয়ারার দেহে বিষ পাওয়া গিয়েছে। এই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই পুলিশ নূর মহম্মদকে গ্রেফতার করে ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করেছে।
পুলিশ জানায়, গত ৯ এপ্রিল পেটের ব্যাথা নিয়ে আনোয়ারা চৌধুরীকে তার মামা আগরতলার আই জি এম হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্মরত ডাক্তার পেট ব্যাথা এবং বমি কমাবার ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেন। বাড়িতে ফিরে আনোয়ারার অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। তার বাবাকে খবর দিয়ে আনানো হয়। তারপর তাকে আবার জি বি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেই রাতেই তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়, হার্ট অ্যাটাকে আনোয়ারার মৃত্যু হয়েছে। তার মামা তড়িঘড়ি ভাগ্নির দেহ কবরস্থ করেন।
প্রথম থেকেই আনোয়ারার সহপাঠীদের অভিযোগ ছিল, আনোয়ারাকে হত্যা করা হয়েছে। মহিলা পলিটেকনিকের ছাত্রীরা দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পশ্চিম মহিলা থানা এবং পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে লাগাতার ধর্না দিতে থাকেন। আগরতলার ছাত্রছাত্রীরা ‘আনোয়ারা ছাত্র সমাজ’ নামক একটি মঞ্চ গড়ে গত এক মাস ধরে লাগাতার আন্দোলন চালায়। শেষ পর্যন্ত এক মাস পর আনোয়ারার দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করানো হয়। শুক্রবার আনোয়ারা ছাত্র সমাজের সমর্থক ছাত্রছাত্রীরা পশ্চিম থানার সামনের সব রাস্তা বন্ধ করে দেয়। রাত বারোটা পর্যন্ত অবরোধ চলে। শেষ পর্যন্ত গভীর রাতে পুলিশ সুপার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও অভিযুক্ত নূর মহম্মদকে গ্রেফতারের খবর দেন। তাতে পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হয়। শনিবার নুর মহম্মদকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হয়। তাকে সোমবার পর্যন্ত জেল হাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে আহ্বায়ক ভিকি প্রসাদ এই মামলার দ্রুত বিচারের দাবি জানান। এ দিকে, মামলার তদন্ত ভার সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে।