রয়টার্সের ফাইল চিত্র।
ফল মিলল হাতেনাতে। মুম্বই পুলিশের হেফাজতে তাঁর উপর অবিচার হতে পারে বলে গত কালই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ছোটা রাজন। তাই মুম্বই নয়, ইন্দোনেশিয়ার বালি থেকে প্রথমে তাঁকে দিল্লিতেই ফেরানো হবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর। ডনের দেশে ফেরার দিন নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা থেকে গেল আজও।
রাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ যেহেতু মহারাষ্ট্রেই সব চেয়ে বেশি, তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে মুম্বইয়ের আর্থার জেলে রাখার কথাই ভেবেছিল দিল্লি। কিন্তু সূত্রের খবর, মুম্বই পুলিশ নয়, এ বার তাঁকে প্রথম জেরা করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। দিল্লি অথবা ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনের কোন একটি ‘সেফ হাউস’-এ রাখা হবে বালি থেকে ধৃত রাজনকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল সিকিউরিটি
গার্ড (এনএসজি) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও হয়েছে।
গত কালই দাউদ–বোমা ফাটিয়েছিলেন ছোটা রাজন। বলেছিলেন, মুম্বই পুলিশের একাংশের সঙ্গে এখনও দাউদ ইব্রাহিমের যোগাযোগ রয়েছে। দাউদের হয়ে কাজও করেন তাঁদের একাংশ। তাই মুম্বই পুলিশের হেফাজতে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এর জেরেই কেন্দ্র রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদলায় বলে সূত্রের খবর। গত কাল রাতেই রাজনকে দিল্লি ফেরানো নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রের শীর্ষ কর্তারা। সুর নরম মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসেরও। ধরা পড়ার পর থেকেই রাজনকে তিনি মুম্বই ফেরানোর কথা বলে আসছেন। তবে আজ সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘ছোটা রাজনকে হেফাজতে রাখার বিষয়টি কেন্দ্রের সঙ্গে পরামর্শ করেই ঠিক করা হবে।’’
তবে ধৃত ডনকে কবে দেশে ফেরানো হবে, তা নিয়ে ধন্দ কাটছে না। স্থানীয় মাউন্ট রিনজিনি আগ্নেয়গিরি থেকে আজও ছাই বেরোতে থাকায় বন্ধ রাখা হয়েছে বালি বিমানবন্দর। আগামিকাল সকালের পরিস্থিতি দেখেই বিমান চালানোর অনুমতি দেবে স্থানীয় প্রশাসন। তাই পরিস্থিতির বিচারে রাজনকে দিল্লি আনতে আরও দিন দুয়েক লাগতে পারে বলে অনুমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। সূত্রের খবর, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এরই মধ্যে সিবিআইয়ের একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। ময়দানে নামছে দিল্লি পুলিশও। কারণ তাঁদের খাতায় রাজনের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে ব্যবসায়ীদের থেকে তোলা আদায়ের বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। এগুলি নিয়েও আলাদা করে তদন্ত করবে দিল্লি পুলিশ।
যদিও ডনকে জেরা করার ক্ষেত্রে মুম্বই পুলিশের ভূমিকা কী হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। দাউদের সঙ্গে সেখানকার পুলিশের যোগাযোগ নিয়ে ছোটা রাজনের যে অভিযোগ, তা-ও ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। মাস কয়েক আগেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব তথা বিজেপি সাংসদ আর কে সিংহ একই অভিযোগ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, বাজপেয়ী জমানায় দাউদকে ধরার জন্য একটি পরিকল্পনা নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু মহারাষ্ট্র পুলিশের কিছু অফিসারের কারণেই তা ভেস্তে যায়। বাতিল হয়ে যায় গোপন অভিযান। দাউদের নির্দেশেই এমনটা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাই গত কাল রাজনের অভিযোগ পেয়ে, তাঁর প্রাণহানির আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দিতে পারেনি কেন্দ্র।