চিনের প্রাচীর টপকে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবে নাম জইশের

পুলওয়ামা কাণ্ডের পর দ্বিপাক্ষিক ভাবে এখনও পর্যন্ত ভারতের পাশে দাঁড়ায়নি চিন। বরং জইশ নেতা মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ জঙ্গির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতাই করে এসেছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১৬
Share:

কড়া নিরাপত্তা পুলওয়ামায়।

কূটনৈতিক ভাবে ভারতকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে পুলওয়ামা কাণ্ডের কড়া নিন্দা করল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। তাৎপর্যপূণ ভাবে এই পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশ চিনও পাকিস্তানের মদত পাওয়া জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের নাম উল্লেখ করা ওই প্রস্তাবটিতে সই করেছে। গোটা বিষয়টিকে লাগাতার কূটনৈতিক প্রয়াসের ফল হিসাবে দেখাতে চাইছে সাউথ ব্লক।

Advertisement

পুলওয়ামা কাণ্ডের পর দ্বিপাক্ষিক ভাবে এখনও পর্যন্ত ভারতের পাশে দাঁড়ায়নি চিন। বরং জইশ নেতা মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ জঙ্গির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতাই করে এসেছে।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সম্মিলিত প্রস্তাবটিতে স্বাক্ষর করার অর্থ এই নয় যে কাল থেকে ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের দিকে তোপ দাগবে বেজিং। বরং নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে জইশের নাম উল্লেখ থাকাটাকে চিনের বিদেশ মন্ত্রক হালকা ভাবে দেখাতে চাইছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে— কোনও সিদ্ধান্ত নয়, সাধারণ ভাবে একটি সংগঠনের নাম করা হয়েছে বিবৃতিটিতে।

Advertisement

তবে নিরাপত্তা পরিষদ এই প্রস্তাবটি পাশ করায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের কিছুটা সুবিধা হয়ে গেল। এমন একটা সময়ে এই প্রস্তাব পাশ হল, যখন পাকিস্তান বিভিন্ন ভাবে ভারতের ‘যুদ্ধংদেহি’ মানসিকতার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে পৌঁছবার চেষ্টা করছে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ এই প্রস্তাব সংক্রান্ত একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, ‘জম্মু-কাশ্মীরে এই আত্মঘাতী হামলা কাপুরুষোচিত ও ঘৃণ্য কাজ। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’ পাশাপাশি এ কথাও জানিয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সন্ত্রাসবাদ। এর বিরুদ্ধে সকলকেই এক সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে।

যারা সন্ত্রাসবাদে মদত জোগাচ্ছে এবং সন্ত্রাসকে জিইয়ে রাখতে দিনের পর দিন অর্থ সহযোগিতা করে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ আন্তর্জাতিক আইন মেনে সব দেশ যেন এ ব্যাপারে ভারত সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে— বিবৃতিতে এই আর্জিই জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। পরিষদের বক্তব্য, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত কোনও কার্যকলাপকে বরদাস্ত করা হবে না।

শুক্রবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকে কাশ্মীরের প্রসঙ্গ ওঠে। তিনি জানান, তাঁরা ওই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন। জঙ্গি কার্যকলাপের মোকাবিলায় এর আগে ২০১৭ সালে ভারত এবং ইইউ যৌথ বিবৃতিও দেয়। কাশ্মীরের ঘটনার পরেও এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা চলছে। বিশ্ব জুড়ে জঙ্গি ও জঙ্গি গোষ্ঠী নিয়ে ইইউয়ের নিজস্ব তালিকা রয়েছে বলেও জানান ওই কূটনীতিবিদ। সেই তালিকায় জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই তইবা, হাফিজ সইদ-সহ অনেকের নাম রয়েছে। সেখানে মাসুদ আজহারের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ইইউয়ের দুই সদস্য— ব্রিটেন ও ফ্রান্স প্রস্তাব দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন