মৃত্যুর ছায়া দীর্ঘ হচ্ছে আমেরিকায়। জাতিবিদ্বেষের শিকার হয়ে একের পর এক ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত গুলিবিদ্ধ হচ্ছেন। পাল্লা দিয়ে চাপ বাড়ছে দিল্লির। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ টুইট করে শোকপ্রকাশ করছেন। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে চাপ কমছে না।
আমেরিকায় ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত কে সি সিংহের মতে, ‘‘অসহিষ্ণুতা এবং ঘৃণার এই সমস্যার সহজ সমাধান ভারত অথবা আমেরিকা — কোনও দেশের কাছেই আছে বলে মনে হয় না।’’ প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতের মতে, সমস্যা আরও বেড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নীতিতে। বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক—এই দু’টি শ্রেণিকেই এক করে দেখে মোদী সরকার। বিশাল ওই অনাবাসী সম্প্রদায়কে ঘিরে শক্তিশালী ‘লবি’ তৈরি করতে চাইছে তারা। ফলে এই বিশাল সম্প্রদায়ের সমস্যা মেটাতে গিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সদ্যসমাপ্ত বৈঠকে বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়ে এসেছেন বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর। পাশাপাশি সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নভতেজ সরনাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে ধারাবাহিক ভাবে সক্রিয় দৌত্য চালিয়ে যাওয়ার জন্য। নভতেজ ইতিমধ্যেই মার্কিন কংগ্রেসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতা এবং আমেরিকার নানা রাজ্যের শীর্ষ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছেন। বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন, বিশাল ওই দেশে এমন পূর্বপরিকল্পনাহীন এবং বিচ্ছিন্ন হামলার মোকাবিলা করার কাজটা অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু এমনটা যদি চলতেই থাকে তাহলে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হবে। ঘরোয়া রাজনীতিতেও যথেষ্ট অস্বস্তির মধ্যে পড়বে সরকার। ইতিমধ্যেই পঞ্জাবের উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর বাদল সুষমার কাছে আর্জি জানিয়েছেন, দীপ রাইয়ের ঘটনার তদন্তে আরও সক্রিয় হোক ভারত সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মার্কিন সরকারের জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করার আর্জি জানিয়েছেন।
নভতেজ সরনার অফিস থেকে টুইট করে বলা হয়েছে, ‘‘হার্নিশ পটেল এবং দীপ রাইয়ের উপর প্রাণঘাতী হামলা নিয়ে ভারতের গভীর উদ্বেগের কথা আমেরিকাকে জানানো হয়েছে।’’ পাশাপাশি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে শ্রীনিবাস কুচিভোটলা-হত্যাকাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে খোঁজ-খবরাখবর নেওয়া হচ্ছে।