(বাঁ দিক থেকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।
গত মে মাসে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে সশস্ত্র সেনা সংঘাত হয়েছিল, তা থেকে সুপরিকল্পিত ভাবে একাধিক ফয়দা তুলেছে চিন। এমনটাই দাবি করা হল আমেরিকার একটি রিপোর্টে। দাবি, চার দিনের ওই ভারত-পাক সংঘাতকে নিজেদের সামরিক শক্তি পরীক্ষার ‘লাইভ গ্রাউন্ড’ হিসাবে ব্যবহার করেছে বেজিং। সেই পর্যবেক্ষণ পরবর্তী সময়ে যুদ্ধের ময়দানে তাদের কাজে লাগবে।
সম্প্রতি আমেরিকা-চিন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সংঘাতকে চিন কী ভাবে কাজে লাগিয়েছে, তা সেই রিপোর্টে বিশদে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘ভারত-পাক সংঘাতকে অত্যন্ত সুযোগসন্ধানী ভঙ্গিতে কাজে লাগিয়েছে বেজিং। তার মাধ্যমে নিজেদের অস্ত্রের অত্যাধুনিকতা পরীক্ষা করেছে। অস্ত্রের কার্যকারিতার কথা প্রচার করেছে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের প্রেক্ষাপটে যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।’’
বস্তুত, চিনের তৈরি একাধিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে পাকিস্তানের হাতে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জবাবে তারা ভারতের বিরুদ্ধে ওই সমস্ত অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল। ব্যবহার করেছিল চিনা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। চিনের তৈরি এইচকিউ-৯ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র এবং জে-১০ যুদ্ধবিমান পাকিস্তান ব্যবহার করেছিল ওই সংঘাতেই। এত দিন এই অস্ত্রপ্রযুক্তি চিনের হাতে থাকলেও তারা প্রত্যক্ষ কোনও সংগ্রামে তা ব্যবহার করার সুযোগ পায়নি। সে দিক থেকে বিবেচনা করলে এই প্রথম কোনও প্রত্যক্ষ ‘যুদ্ধক্ষেত্রে’ চিনের ওই সমস্ত অস্ত্র কাজে লাগল। ফলে এটাই ছিল অস্ত্রগুলির বাস্তব পরীক্ষার সুযোগ। চিন তা কাজে লাগিয়েছে, দাবি আমেরিকার রিপোর্টে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জুন মাসেই আরও ৪০টি জে-৩৫ যুদ্ধবিমান, কেজে-৫০০ বিমান এবং কিছু ব্যালিস্টিক মিসাইল কেনার প্রস্তাব পাকিস্তানকে দিয়েছে চিন। অর্থাৎ, নিজেদের অস্ত্রের কার্যক্ষমতার প্রচারেও ভারত-পাক সংঘাতের উদাহরণকে তারা ব্যবহার করেছে সুচারু ভাবে।
ফ্রান্সের গোয়েন্দা সূত্র উল্লেখ করে মার্কিন রিপোর্ট জানিয়েছে, ফরাসি যুদ্ধবিমান রাফালের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুয়ো প্রচার চালিয়েছিল চিন। সমাজমাধ্যমে ভুয়ো ভিডিয়ো এবং ছবি পোস্ট করে তা ভাইরাল করে দেওয়া হয়েছিল। নিজেদের জে-৩৫-এর বিপরীতে ভারতের ব্যবহৃত রাফালকে ছোট করতেই এই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল। ব্যবহার করা হয়েছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও।