ভিসা নীতি নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এইচ-১বি ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন অত্যন্ত দক্ষ পেশাদারদের অগ্রাধিকার দিতে চাইছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন বাণিজ্যসচিব উইলবার রস।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আইএমএফ-এর বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকায় গিয়ে ওয়াশিংটনে মার্কিন বাণিজ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ট্রাম্প সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই মোদী সরকারের সঙ্গে ক্যাবিনেট মন্ত্রী স্তরের প্রথম বৈঠক। সেই বৈঠকেই এইচ-১বি ভিসা নিয়ে এ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উদ্বেগ জানিয়ে জেটলি বলেছেন, ভিসা নীতি বদলানোর আগে যেন ট্রাম্প সরকার মার্কিন অর্থনীতিতে ভারতীয় পেশাদারদের অবদানের কথাটা ভেবে দেখে।
জেটলিকে আশ্বস্ত করতে রস যুক্তি দেন, ট্রাম্প-প্রশাসন সবেমাত্র ভিসা নীতির পর্যালোচনা শুরু করেছে। তবে নীতিগত ভাবে অত্যন্ত দক্ষ পেশাদার বা ‘হাইলি স্কিলড প্রফেশনাল’-দের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। চলতি সপ্তাহেই এইচ-১বি ভিসা নীতির পর্যালোচনার জন্য প্রশাসনিক নির্দেশে সই করেছেন। মার্কিন কংগ্রেসে নতুন নীতি চূড়ান্ত হওয়ার আগে এই সময়টুকুতেই ভারতের ১৫ হাজার কোটি ডলারের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের স্বার্থরক্ষার কাজটি সেরে ফেলতে চায় নয়াদিল্লি। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন নাসকম-এর বক্তব্য, এখনই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে মেঘ ঘনিয়েছে এমন নয়। কিন্তু এখন মার্কিন সরকার প্রতি বছর যে ৬৫ হাজার এইচ-১বি ভিসা দেয়, তার জন্য লটারি-ব্যবস্থা রয়েছে। তার বদলে অত্যন্ত দক্ষ পেশাদারদের অগ্রাধিকারের নীতি নিলে তার প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
এ জন্য নরমে-গরমে চাপ তৈরির কৌশল নেওয়া হচ্ছে। জেটলি যখন ওয়াশিংটনে রসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তখন দিল্লিতে বসে বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ কড়া ভাষায় বলেছেন, ‘‘শুধু ভারতীয় সংস্থাগুলি আমেরিকায় ব্যবসা করছে, তা নয়। বহু বড় মার্কিন সংস্থাও ভারতে রয়েছে, মুনাফা করছে, যা মার্কিন অর্থনীতিতে যাচ্ছে। এ সব যেন মনে রাখা হয়।’’ নির্মলার যুক্তি, উন্নত দেশগুলি রক্ষণশীল দেওয়াল তুলছে। পণ্যের ক্ষেত্রে মুক্ত বাণিজ্যর জন্য যেমন বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন (ডব্লিউটিও)-র কাঠামো রয়েছে, পরিষেবার ক্ষেত্রেও তেমন হওয়া উচিত। মোদী সরকারের এ বিষয়ে তাগিদ বেশি। কারণ দেশের জিডিপি-র ৬০ শতাংশ এখন আসে পরিষেবা ক্ষেত্র থেকে। ২৮ শতাংশ কর্মসংস্থানও হয় সেখানে। ভারত তাই চাইছে, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের মতো পেশাদারদের এক দেশ থেকে আর এক দেশে যাওয়া আরও সহজ হোক। ডিসেম্বরে আর্জেন্তিনায় ডব্লিউটিও-র মন্ত্রী-স্তরের বৈঠকে ফের এ বিষয়ে সরব হবে নয়াদিল্লি।