National News

ছুটি পেতেই স্কুলে খুন? তেমনই বলেছে ভদোদরার ক্লাস টেনের ছাত্র

ফরেন্সিক রিপোর্ট বলছে, তাড়ভির শরীরে ৩১টি ছোটবড় ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। ভদোদরাতে মামার বাড়িতে থাকত দেব। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে দেব শহরে পড়াশোনার জন্য এসেছিল। ভর্তি হয়েছিল শ্রী ভারতী বিদ্যালয়ে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভদোদরা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ১৬:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

হোমওয়ার্ক না করায় শিক্ষক বকেছিলেন। তাই এমন কাণ্ড ঘটাতে চাইছিল ছাত্রটি, যাতে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়! ভদোদরার ছাত্র খুনের পিছনে এই ভাবনাই কাজ করেছিল বলে মনে করে পুলিশ। এই ভাবনারই সহজ শিকার হয়ে যায় নবম শ্রেণির ছাত্র দেব তাড়ভি।ছাত্র খুনের সন্দেহে ধৃত ছাত্রকে জেরা করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। ভদোদরার স্কুলের ঘটনা কোথাও যেন মিলিয়ে দিয়েছে হরিয়ানার গুরুগ্রামের রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ঘটনাকে।খুনের জন্য সেই একই ভাবে বেছে নেওয়া হয় স্কুলের শৌচাগার, খুনের কারণও প্রায় এক!

Advertisement

শুক্রবার ভদোদরার শ্রী ভারতী বিদ্যালয়ের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় নবম শ্রেণির ছাত্র দেব তাড়ভির রক্তাক্ত দেহ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই দিনই আটক করা হয় স্কুলেরই সিনিয়র এক ছাত্রকে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছিল, দুই ছাত্রের মধ্যে মারামারির কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে কারণ তত স্পষ্ট হয়েছে পুলিশের কাছে। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই ছাত্র স্বীকার করেছে স্কুল বন্ধ করতেই দেবকে খুন করে সে।মাত্র দশ দিন আগেই ওই স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল দেব। সহজ শিকার হিসাবে তাকেই বেছে নেয় অভিযুক্ত ছাত্র। রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ঘটনার মতোঠিক একই কায়দায় দেবকে স্কুলের শৌচাগারে নিয়ে যায়, সেখানেই তাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে।সিনিয়র ছাত্রটির সঙ্গে শৌচাগারে যেতে দেখা যায় দেবকে। স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে সেই ঘটনা। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখেই সিনিয়র ছাত্রটিকে আটক করে পুলিশ।দফায় দফায় জেরার পর খুনের কথা স্বীকার করে ছাত্রটি, তদন্তের পর তেমনই দাবি করেছে পুলিশ। তবে দেবের সঙ্গেকোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না বলেও জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে অভিযুক্ত।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘটনার পরের দিন স্কুল সংলগ্ন একটি মন্দিরের ছাদ থেকে ধারালো একটা ছুরি, রক্তমাখা স্কুলের পোশাক, এক বোতল লঙ্কার গুঁড়ো উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, খুনের প্রমাণ লোপাট করতেই সেগুলো মন্দিরের ছাদে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল ছাত্রটি। এক পুলিশ অফিসার জানান, এই ঘটনার পরও অনুশোচনার কোনও চিহ্নমাত্র ধরা পড়েনি ছাত্রটির চোখে-মুখে।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্বপ্নের উড়ান! চা বিক্রেতার মেয়ে যুদ্ধবিমানের পাইলট

ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল অভিযুক্ত ছাত্র। শনিবার ভোর ৩টে সময় ভদোদরা থেকে ২৩০ কিলোমিটার দূরে মহারাষ্ট্র সীমানার কাছে ভালসার থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ভদোদরার পুলিশ কমিশনার মনোজ শশীধর জানান, ভালসারে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছিল ছাত্রটি। সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবারের পর থেকেই বেপাত্তা ছিল সে।

ফরেন্সিক রিপোর্ট বলছে, তাড়ভির শরীরে ৩১টি ছোটবড় ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। ভদোদরাতে মামার বাড়িতে থাকত দেব। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে দেব শহরে পড়াশোনার জন্য এসেছিল। ভর্তি হয়েছিল শ্রী ভারতী বিদ্যালয়ে। মামার বাড়ি থেকেই স্কুলে যাতায়াত করত সে। দেবের মামী হংস তাড়ভি বলেন, “দেবকে লালনপালন করে বড় করেছি। অভিযুক্তের ফাঁসি চাই।” শনিবারই দেবের শেষকৃত্য হয়েছে আনন্দ জেলায় তার গ্রামে। সেখানে উপচে পড়েছিল গ্রামবাসীদের ভিড়। শোকস্তব্ধ মানুষের মধ্যে ছিল চাপা একটা ক্ষোভ। প্রত্যেকেই অভিযুক্ত ছাত্রের কঠোর শাস্তি চাইছেন। পাশাপাশি, তাঁরা ওই স্কুল বন্ধ করে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন।

আরও পড়ুন: ‘শাস্তি’ দেওয়ার জন্য ঝাড়খণ্ডে গণধর্ষণ, জেরায় বলল ধৃতেরা

গুরুগ্রামের রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শৌচাগারে ওই স্কুলেরই দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র প্রদ্যুম্ন ঠাকুরকে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। গত বছর ৯ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিল ওই স্কুলেরই একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। সারা দেশেই ওই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন