দুই ফরাসি খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারককে ‘শহিদ সন্ত’-এর (মার্টের সেন্ট) মর্যাদা দিতে চলেছে ভ্যাটিকান। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে
তাঁদের মৃত্যুর পর পেরিয়ে গিয়েছে ১৬০ বছর। এ বার অরুণাচলপ্রদেশের এক বিশপের উদ্যোগে দুই ফরাসি খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারককে ‘শহিদ সন্ত’-এর (মার্টের সেন্ট) মর্যাদা দিতে চলেছে ভ্যাটিকান।
নিকোলাস মিশেল ক্রিক ও অগাস্টিন এতিয়েন ব্যুরি উনিশ শতকের মাঝামাঝি উত্তর-পূর্ব ভারতে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারে এসেছিলেন। মিসমি পাহাড়ে মিসমি উপজাতি নেতার নির্দেশে তাঁদের হত্যা করা হয়। ২০১০-১১ সালে তাঁদের ইতিহাস খুঁজে বের করেন অরুণাচলের মিয়াওয়ের বিশপ জর্জ ফিলিপ্পারামবিল। জানা যায়, ‘সোসাইটি অফ প্যারিস ফরেন মিশনস’-এর ওই দুই সদস্য মাদ্রাজ (বর্তমানে চেন্নাই) থেকে কলকাতা হয়ে গুয়াহাটি এসেছিলেন। পরে পৌঁছন অরুণাচলে। অরুণাচলের বিভিন্ন অংশ তখন দুর্গম। উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় সভ্যতার আলো পৌঁছয়নি। নিকোলাস ও অগাস্টিন পাহাড়ি উপজাতিদের মধ্যে খ্রিস্টের বাণী প্রচার করতে শুরু করেন। দুষ্কৃতীরা তাঁদের সর্বস্ব লুট করে নিয়েছিল। কপর্দকহীন হয়ে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ধর্মবিশ্বাসে অটল ছিলেন তাঁরা। লোহিত জেলার সোম্মে গ্রাম পেরিয়ে তিব্বতে ঢোকার আগে ১৮৫৪ সালের ২ অগস্ট তাঁদের হত্যা করা হয়। মৃত্যুর সময় নিকোলাসের বয়স ছিল ৩৫। অগস্টিনের ২৮। এ নিয়ে মিয়াওয়ের বিশপের রিপোর্ট ভ্যাটিকানে পাঠানো হয়েছিল। ভ্যাটিকান জানায়, কড়া পরীক্ষা ও বিবেচনার পর দু’জনকে ‘সারভেন্ট অফ গড’ থেকে ‘শহিদ সন্ত’ স্তরে উন্নীত করা হবে।
‘সন্ত’ হতে হলে অলৌকিক ঘটনা ঘটাতে হয়। ‘মিয়াও ডায়সেসি’র প্রচার সচিব ফাদার ফেলিক্স অ্যান্থনি জানান, যে মিসমিদের হাতে দু’জনের প্রাণ গিয়েছিল, যাঁরা এখনও খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেননি, তাঁরাই এত বছর ধরে নিকোলাস ও অগাস্টিনের সমাধি সংরক্ষণ করেছেন। লোকগাথাও হয়েছে তাঁদের নিয়ে। গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন, নিকোলাস ও অগাস্টিনের রক্ত পাহাড়ে মিশে তৈরি হয় ঝর্না। পাহাড় উর্বর হয়ে ওঠে।