—ফাইল চিত্র।
চার দিকে বড় বড় পাথরের স্তম্ভ ডাঁই করে রাখা। গায়ে খোদাই করা কারুকার্য। এক দিকে রাখা করসেবকদের আনা ‘শ্রীরাম’ লেখা ইট। অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি ন্যাসের কর্মশালার মাঝখানে কাচ দিয়ে ঘেরা প্রস্তাবিত রামমন্দিরের কাঠের মডেল। পাশে মন্দিরের জন্য দানের রসিদ কাটছেন স্বদেশ ভাই। আরএসএসের প্রচারক।
“পঁচিশ বছরের অপেক্ষা শেষ। এ বার রামমন্দির হবে”—রীতিমতো বুক ঠুকে বললেন স্বদেশ ভাই। উত্তরপ্রদেশে ভোটে বিজেপির নিরঙ্কুশ জয়ের উত্তেজনায় প্রবীণ স্বদেশ ভাই রীতিমতো ফুটছেন। ১৯৯২-তে বাবরি মসজিদ ভাঙার পর থেকেই তিনি অযোধ্যায়। “কেন্দ্রে আমরা ছিলামই। এ বার বিধানসভাও হাতে এসে গেল। লোকসভার পরে রাজ্যসভাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতাও হয়ে যাবে। ক’দিন পরে আমাদের রাষ্ট্রপতিও হবেন। এই সুযোগ আর আসবে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সরকার এ বার রামমন্দির তৈরির জন্য অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসুক। সব আইনি বাধা কাটিয়ে দিক। বাকিটা আমরা বুঝে নেব।’’
অযোধ্যার বিতর্কিত জমি থেকে কিছুটা দূরেই এই রাম জন্মভূমি ন্যাসের কর্মশালা। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে মন্দির তৈরির প্রস্তুতি চলছে বহুদিন ধরেই। পাথর কাটা, খোদাই করে সব সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। মাঝখানে কাজের গতি ঢিমে হয়েছিল। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে রাজস্থান, হরিয়ানা থেকে নতুন পাথর এসেছে। মন দিয়ে তাতে খোদাইয়ের কাজ করছেন রজনীকান্ত সোমপুরার মতো শিল্পীরা।
আরও পড়ুন: জল নিয়ে বিবাদ, জুতোও চাটতে হল অরুণাচল থেকে আসা পড়ুয়াকে
উত্তরপ্রদেশে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিধানসভা জেতার পর কর্মশালায় এখন সাজো সাজো রব। রাম জন্মভূমি ন্যাসের প্রধান নিত্যগোপাল দাস জানাচ্ছেন, দুই মহলা, ২১২টি স্তম্ভের মন্দিরের চার ভাগের তিন ভাগ কাজই শেষ।
পরিকল্পনা চলছে, অযোধ্যা থেকে সাধুসন্তরা এ বার মিছিল করে গুজরাতের সোমনাথ মন্দিরে আসবেন। লালকৃষ্ণ আডবাণী সোমনাথ থেকে অযোধ্যার দিকে রথযাত্রা করেছিলেন। বিহারের সমস্তিপুরে তাঁকে গ্রেফতার করে লালু প্রসাদের সরকার। এ বার মোদী-জমানায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-আরএসএস-বিজেপি ফের এককাট্টা হচ্ছে দেশ জুড়ে রামমন্দিরের আবেগ উস্কে দেওয়ার জন্য।
ভোটের আগে যোগী আদিত্যনাথ, বিনয় কাটিয়ার, গিরিরাজ সিংহের মতো নেতারা বার বার রামমন্দির ঘিরে আবেগ উস্কে দিয়েছেন। অযোধ্যা থেকে বিজেপির বেদপ্রকাশ গুপ্তর বিপুল ভোটে জয় আসলে রামমন্দিরের দাবিতেই সিলমোহর বলে যুক্তি স্বদেশ ভাইয়ের। রসিদবই খুলে দেখিয়ে স্বদেশের বক্তব্য, “সরকারকে কিছু করতে হবে না। শুধু জমিটা হাতে তুলে দিক। এক পয়সাও খরচ করতে হবে না”।