পাকিস্তানকে এড়িয়ে পণ্য গেল আফগানিস্তানে

আফগানিস্তানের উন্নয়নের প্রশ্নে পাকিস্তানকে উপেক্ষা করার লক্ষ্য ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। ভারতের সেই সেই কৌশল বাস্তব চেহারা নিতে শুরু করেছে এ বার। গত কাল ইরানের চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে আফগানিস্তানে পণ্য রফতানি করেছে ভারত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০২
Share:

ইচ্ছে পূরণ হলো এত দিনে!

Advertisement

আফগানিস্তানের উন্নয়নের প্রশ্নে পাকিস্তানকে উপেক্ষা করার লক্ষ্য ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। ভারতের সেই সেই কৌশল বাস্তব চেহারা নিতে শুরু করেছে এ বার। গত কাল ইরানের চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে আফগানিস্তানে পণ্য রফতানি করেছে ভারত। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, অচিরেই পণ্য আনা-নেওয়ার একটি বিকল্প পথ হয়ে উঠবে এটি। আগামী কয়েক মাসে মোট ১১ লক্ষ টন গম এই পথে কাবুলে পাঠাবে নয়াদিল্লি। নতুন এই পথটির ব্যবহার বাড়লে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান যেমন লাভবান হবে, তেমনই কৌশলগত লাভ ভারতেরও। এবং স্বাভাবিক ভাবেই পাকিস্তান এতে অস্বস্তিতে।

যদিও ইসলামাবাদকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভারত-আফগান পণ্য যোগাযোগ বাড়ানোর এই কৌশল নিয়ে ভবিষ্যতে কত দূর এগোনো যাবে, সেটা এখনই স্পষ্ট নয়। বিভিন্ন ভাবে বাদ সাধতে পারে পাকিস্তান। তা ছাড়া, মুখে মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন যা-ই বলুন না কেন, এ ব্যাপারে আমেরিকার ভূমিকাও যে কী হতে চলেছে, ধোঁয়াশা রয়েছে তা নিয়েও। তবে ভবিষ্যতে যা-ই ঘটুক, বিদেশ মন্ত্রক মনে করছে, ‘আপাতত অ্যাডভান্টেজ সাউথ ব্লক’।

Advertisement

বস্তুত, পাক বাগড়ার কারণেই এই বিকল্প পথটি বেছে নিতে হয়েছে ভারত ও আফগানিস্তানকে। ‘আফগানিস্তান-পাকিস্তান ট্রানজিট ট্রেড এগ্রিমেন্ট’ থাকা সত্ত্বেও ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে কাবুলে পণ্য যাওয়া আটকে দিচ্ছে ইসলামাবাদ। সম্প্রতি যা নিয়ে সরব হন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।

তবে পরিবর্ত রুট চালু করার চেষ্টাটা চলছিল গত এক বছর ধরেই। ২০১৬ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইরান সফরে গিয়ে প্রথম বার আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা করা এবং একটি ট্রানজিট করিডর তৈরির জন্য ত্রিমুখী চুক্তির ধারণা তুলে ধরেন। অবশেষে তার কাজ শুরু হল গত কাল।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দিল্লি-কাবুল যে চাবাহার বন্দর দিয়ে বিকল্প রুট চালু করতে তৎপর, তার আঁচ পেয়েই জল ঘোলা করতে নেমে পড়েছিল পাকিস্তান। সূত্রের খবর, সে দেশের সেনাপ্রধান কমর জাবেদ অক্টোবর মাসের গোড়ায় ঘানির সঙ্গে দেখা করে বলেন, ভারত-আফগান বাণিজ্য নিয়ে তাঁরা ভারতের সঙ্গে আলোচনা করতে চান। ঘানি যেন ভারতকে এই প্রস্তাবের কথা জানান।

স্বাভাবিক ভাবেই ভারত বকলমে আসা এই ‘প্রস্তাব’ নাকচ করে দেয়। এর পরে টিলরাসনের সঙ্গে আসা এক মার্কিন কর্তাও জানান, ভারত আলোচনার ওই পাক প্রস্তাব মেনে নেবে, এমনটাই নাকি তাঁরা আশা করেছিলেন! তাতে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার ‘একটি ছোট জানলা খুলত,’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মার্কিন প্রতিনিধির ওই মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি বিদেশ মন্ত্রক। বরং কাবুল প্রশ্নে ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ ভবিষ্যৎ সমীকরণ কোন দিকে নিয়ে যায়— সে দিকে সতর্ক নজর রাখছে সাউথ ব্লক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন